নিজস্ব প্রতিবেদক
মোহাম্মদপুরে যুবক খুন
প্রভাবশালী আসামিদের খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ!
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তছির উদ্দিন খুনের নেপথ্যে ছিল ডিশ ব্যবসা, গরুর হাট নিয়ন্ত্রণ, খালভরাট করে দোকান নির্মাণ ও খাসজমি দখল। এই কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলাল ও কমিশনার রাজিব গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল। গত বুধবার রাতে এরই জের ধরে রাজধানী হাউজিং এলাকায় তছিরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তবে এ ঘটনায় জড়িত এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পিচ্চি হেলালের অন্যতম সহযোগী কাইল্যা সুমন গ্রুপে কাজ করত তছির। তার সঙ্গে রাজিব গ্রুপের ইয়াসিন, জাকির ও ফারুকের বিরোধ হয়। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে জাকির ও ফারুক ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তছিরকে। নিহতের ভাই বছির উদ্দিন জানান, তছির আগে যুবলীগ করত এবং জাকিরের সঙ্গে মিছিল-মিটিংয়ে যেত। তার সঙ্গে চলাফেরা ছেড়ে দেওয়ায় শত্রুতা তৈরি হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলছেন, ডিশ ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র করে ক্যাবল ব্যবসায়ী জাকিরের সঙ্গে বিরোধ হয় তছিরসহ বেশ কয়েকজনের। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বসিলা এলাকায় গরুর হাট বসানো ও স্থানীয় খালপাড়ে ট্রাকস্ট্যান্ড তৈরি এবং দোকান বরাদ্দ নিয়েও বিরোধ তৈরি হয়। উভয় গ্রুপের লোকজনই খারাপ। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। চাঁদ উদ্যান এলাকার ব্যবসায়ী আলম হোসেন জানান, সম্প্রতি ইয়াসিনের নেতৃত্বে রাজিবের লোকজন খালপাড়ে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এই টাকা নিয়ে পিচ্চি হেলাল গ্রুপের কাইল্যা সুমনের সঙ্গে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। রাজিব কয়েক বছর আগেও ছিল ছন্নছাড়া। তার বাবা ও চাচা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। এখন সে কয়েক শ কোটি টাকার মালিক। এর সবই হয়েছে খাসজমি দখল আর চাঁদাবাজি করে। এসব কারণে পিচ্চি হেলাল গ্রুপের সঙ্গে তাদের বিরোধ তৈরি হয়েছে। এরই জের ধরে পিচ্ছি হেলাল গ্রুপের তছিরকে খুন করে রাজিব গ্রুপ।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নিহত তছির উদ্দিনের বোন মুন্নি বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে জাকির ও পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
"