প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ আগস্ট, ২০১৭

‘আইএস জঙ্গি’ সুজনের অর্থ পাচার নেটওয়ার্ক নিয়ে নতুন তথ্য

সন্দেহভাজন এক আইএস জঙ্গির বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা অর্থ পাচার ও জঙ্গি অর্থায়নের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে নতুন তথ্য পেয়েছে, যার পেছনে ছিলেন সিরিয়ায় নিহত ‘বাংলাদেশি জঙ্গি’ সাইফুল হক সুজন।

যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে জমা দেওয়া এফবিআইয়ের একটি নথির বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত বৃহস্পতিবার এ খবর জানায়।

পত্রিকাটি লিখেছে, দেড় বছর আগে মেরিল্যান্ডে অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ এলশিনাওয়ি নামের ৩০ বছর বয়সী যে সন্দেহভাজন আইএস সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই তদন্তকারীরা জঙ্গিদের অর্থ পাচার নেটওয়ার্কের ‘ক্লু’ পান। দীর্ঘদিন নজরদারির পর ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর এলশিনাওয়িকে গ্রেফতার করে এফবিআই। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তার বিরদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বাল্টিমোরের ফেডারেল গ্র্যান্ড জুরি। এতে এলশিনাওয়ি ইবের মাধ্যমে কম্পিউটার প্রিন্টার বিক্রির নাটক সাজিয়ে

যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশেও টাকা হয়েছে। আর এর পেছনে ছিলেন আইএস এর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ‘বাংলাদেশি কম্পিউটার প্রকৌশলী’ সাইফুল হক সুজন।

যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর সিরিয়ায় আইএস এর কথিত রাজধানী রাকার কাছে ড্রোন হামলায় নিহত হন সুজন। যুক্তরাজ্যে কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়াশোনা করা এই বাংলাদেশি সে সময় আইএস এর কম্পিউটার অপারেশন বিভাগের প্রধান ছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীদের ভাষ্য।

বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সাইফুল হক সুজনের বাড়ি খুলনার পাকুড়তিয়া গ্রামে। তার ভাই শরীফুল হক ইমন এবং দুই ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তানরাও বেশ কয়েক বছর ধরে নিখোঁজ। সিরিয়ায় সুজনের নিহত হওয়ার সপ্তাহ দুই আগে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার কারওয়ানবাজারে তার প্রতিষ্ঠান আইব্যাকস টেকনোলজিস লিমিটেডের কার্যালয় অভিযান চালায় পুলিশ। ওই কার্যালয় থেকে সুজনের বাবা এ কে এম আবুল হাসনাত, ছোট ভাই হাসানুল হক ওরফে গালিব মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে জঙ্গি অর্থায়নে সহযোগিতার অভিযোগে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম শুক্রবার জানান, সুজনের বাবা কারাগারে থাকা অবস্থায় কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আর সুজনের ভাই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবার লিখেছে, ওয়েবসাইট তৈরি করে দেওয়া পাশাপাশি ‘প্রিন্টার কনফিগার করে দেওয়ার কাজও’ করত সুজনের কোম্পানি। কিন্তু ওই কোম্পানির নামে ১৮ হাজার ডলারে একটি কানাডীয় প্রতিষ্ঠান থেকে মিলিটারি গ্রেড সার্ভেইলেন্স ইক্যুইপমেন্ট কেনা হয়েছিল বলে তথ্য পেয়েছেন এফবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানিতে তারা আড়িপাতা সরঞ্জাম খুঁজে বের করার যন্ত্রপাতি কেনার অর্ডার দিয়েছিল, যা পাঠানোর কথা ছিল তুরস্কে।

এফবিআইয়ের এফিডেভিটে বলা হয়েছে, আইএস এর এই নেটওয়ার্ক থেকে মোট ৮৭০০ ডলার পেয়েছিলেন মোহাম্মদ এলশিনাওয়ি। এর মধ্যে পেইপ্যালের মাধ্যমে পাঁচটি পেমেন্ট তিনি পেয়েছিলেন সুজনের কোম্পানির কাছ থেকে। এফবিআইএর তথ্য অনুযায়ী, এলশিনাওয়ি ওই অর্থ একটি ল্যাপটপ একটি সেল ফোন ও ভিপিএন কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক কেনার পেছনে খরচ করেন। আইএস নেটওয়ার্কে যোগাযোগের জন্য ওইসব যন্ত্রপাতি তিনি ব্যবহার করতেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস নেটওয়ার্কের দেওয়া অর্থ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনার কথা জানতেন বলে এফবিআইয়ের কাছে স্বীকার করেছেন এলশিনাওয়ি। তবে তিনি নিজে কোনো হামলা পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন না বলে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist