আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গুয়ামে আগস্টেই হামলা চালাতে প্রস্তুত উ. কোরিয়া
মধ্য আগস্টের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ গুয়ামের কাছে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার জন্য তৈরি থাকবে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করলে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হবে। এগুলো জাপানের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে গুয়াম দ্বীপ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সাগরে গিয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আগুন ও উন্মত্ততার’ হুমকির নিন্দা করে ট্রাম্পকে ‘যুক্তিবর্জিত মানুষ’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, খবর বিবিসির। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, উত্তর কোরিয়ার এমন যেকোনো পদক্ষেপ হবে তাদের নিজেদের ‘শাসনক্ষমতা শেষ হতে দেখা।’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিপক্ষে যে কোনো যুদ্ধে পিয়ংইয়ং ‘প্রবলভাবে পরাভূত’ হবে।
গত বুধবার প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া ঘোষণা করে, তারা যুক্তরাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। পরে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরেকটি বিবৃতিতে জানানো হয়, সামরিক বাহিনী আগস্টের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ‘পরিকল্পনাটি প্রস্তুত করে’ অনুমোদনের জন্য নেতা কিম জং উনের কাছে পেশ করবে। গুয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটি আছে। এই ঘাঁটিতে একটি বিমান ক্ষেত্র, একটি সাবমেরিন স্কোয়াড্রন ও দেশটির কোস্টগার্ডের একটি দল আছে। দ্বীপটিতে প্রায় এক লাখ ৬৩ হাজার লোক বাস করে।
কেসিএনের প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কিম রাক গিয়মের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘কেপিএ’র (কোরিয়ান পিপলস আর্মি) উৎক্ষেপণ করা হওয়াসং-১২ ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের শিমানে, হিরোশিমা ও কোচি অঞ্চলের আকাশ অতিক্রম করে যাবে। এগুলো ১ হাজার ৬৫ সেকেন্ডে ৩ হাজার ৩৫৬ দশমিক সাত কিলোমিটার উড়ে গুয়ামের ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে পানিতে গিয়ে পড়বে।’ হওয়াসং উত্তর কোরিয়ার তৈরি মাঝারি এবং দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের নাম।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিস গত বুধবার এক বিবৃতিতে পিয়ংইয়ংকে তার অস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য জোরালো ভাষায় আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ডিপিআরকে-কে (ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া) নিজেকে নিঃসঙ্গ করার বিষয়টি বন্ধ করা বেছে নিতে হবে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের আকাক্সক্ষা ত্যাগ করতে হবে। যদিও এই হুমকিকে কূটনৈতিক উপায়ে সমাধানের সব রকম চেষ্টা করা হবে। তারপরও খেয়াল রাখতে হবে, আমাদের জোটভুক্ত সামরিক বাহিনীগুলো প্রতিরক্ষা ও আক্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিখুঁত, প্রশিক্ষিত ও বলিষ্ঠ সক্ষমতা ধারণ করে।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস আরো বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ং যদি কোনো যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তাহলে দেশটির ওপর ‘সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হবে।’
"