দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
বিএনপি নেতা রাস্তা বন্ধ করায় ১০০ পরিবার মুশকিলে
রাজশাহী দুর্গাপুর পৌরসদর এলাকায় দেবীপুর পাবনা পাড়ার বিএনপির নেতা সাদেকুল ইসলাম রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রামের একশত পরিবারের নারী-পুরুষ এবং শিক্ষার্থীরা প্রায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। এখানকার মানুষ চিকিৎসা সেবা ও হাট-বাজারে যাতায়াত করতে খুব মুশকিলে পড়েছে। শিশুদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। প্রশাসন বা অন্য কোনো মহল থেকে প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে মুশকিলে পড়া মানুষজন। দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, রাস্তা বন্ধের ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এই রাস্তা খুলে না দিলে তিনি দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
দুর্গাপুর উপজেলা সদর থেকে সড়ক পথে ৩ কিলোমিটার দূরে দেবীপুর বাজার এবং এই বাজার থেকে পাবনাপাড়া ১ কিলোমিটার পথ। ওই পথের (রাস্তা) শেষ মাথায় পাবনাপাড়ার গ্রাম। ওই গ্রামে প্রায় একশত পরিবারের বসবাস। দেবীপুর পাবনাপাড়ার রাস্তার মাধ্যমেই প্রতিদিন মোল্লাপাড়া, শ্যামপুর, কাশিপুর, নামুদরখালিসহ বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ ও শিক্ষার্থী রাস্তা ব্যবহারসহ উপজেলা সদর এবং স্কুল ও বাজারে যাতায়াত করে। কিন্তু প্রভাবশালী বিএনপির নেতা সাদেকুল ইসলাম রাস্তার জমি তাদের রেকর্ডভুক্ত জমি দাবি করে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ করেও সুফল পায়নি। এ ব্যাপারে সরজমিনে দেবীপুর ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একাধিক বার চেষ্টা করেও কোনো ফল হয়নি। কারণ ওই বিএনপি নেতা সাকেকুলের বড় ভাই সামশুল ইসলাম ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। সে কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে কিছু বলতে পারছে না।
এই রাস্তা বন্ধ হওয়ায় মুশকিলে পড়া জিয়াউর রহমান বলেন, শত বছর আগের ওই রাস্তাটি। আমরা জানি রাস্তাটি সরকারি। এতদিনেও কেউ কোনো দাবি করেনি। এখন হঠাৎ করে সাদেকুল নামের এক ব্যক্তি জমির মালিক দাবি করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমার ঘরে কয়েক শত মণ আলু রয়েছে। রাস্তা বন্ধের কারণে বাজারজাত করতে পারছি না। আলুগুলো ঘরের মধ্যে পচতে শুরু করেছে। অনেক অনুরোধ করে বাজারজাতের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। আলু বাজারজাত না করতে পারলে প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি হবে। এ রকম সমস্যায় পড়েছেন আরো অনেকে।
সাহাবুর আলী বলেন, ‘আমরা প্রায় দুই মাস ধরে এক রকম অবরুদ্ধ হয়ে আছি । দরকার হলে দূরে কোথাও যেতে পারি না। হাট-বাজারে কোনো কাঁচামাল নিয়ে যেতে পারি না। এতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন মহলে এর প্রতিকার চেয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না।
দুর্গাপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামশুল ইসলাম বলেন, রাস্তা বন্ধের ঘটনাটি সত্য। আমি রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছি। কিন্তু প্রভাবশালীরা রাস্তা খুলতে দেয় না। তিনি আরো বলেন, সরকারি রাস্তার মাথায় এক শ পরিবারের বসবাস। আর ওই রাস্তার মাথায় ৩০ থেকে ৪০ হাত রাস্তা মালিকানায় রয়েছে। কিন্তু কাউন্সিলর দাবি করে বলেন, ৩০ থেকে ৪০ হাত রাস্তা তাদের মালিকানা হলেও সাদেকুলের বড় ভাই আবু সায়েম খাস জায়গা দখল করে রাস্তার পাশে বাড়ি করেছে। ক্ষমতার জোরে তারা রাস্তাটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন বলেন, রাস্তা বন্ধের ঘটনাটি আমি শোনার সঙ্গে সঙ্গে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামশুল ইসলামকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তার পরে কাউন্সিলর বা অন্য কেউ আমাকে কোনো কিছু জানায়নি। তবে রাস্তা খুলে না দিলে আমি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেব বলে জানান পৌর মেয়র।
"