প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
আবার পাহাড়ধসে মা-মেয়েসহ ৪ মৃত্যু
খাগড়াছড়ির রামগড়ে এবং মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পাহাড় ধসে দুই সহোদর ও মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার রামগড়ে এবং বড়লেখায় পৃথক ওই ধসের ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রামগড় (খাগড়াছড়ি) : পাতাছড়া ইউনিয়নের বুদুংছড়া এলাকায় বসতঘরের ওপর পাহাড় ধসে পড়লে মো. মোস্তফার দুই ছেলে মো. নূরুন্নবী (১৪) ও মো. হোসেন (৯) ঘুমন্ত অবস্থায় মাটিচাপা পড়ে মারা গেছে। অন্যদিকে, বড়লেখার ডিমাই এলাকায় পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে মা আছিয়া বেগম (৪০) এবং মেয়ে ফাহমিদা (১৩) নিহত হয়েছে। রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম পাহাড় ধসে দুই সহোদয়ের মৃত্যুর ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
যুব রেড ক্রিসেন্টের রামগড় উপজেলার যুবপ্রধান মো. করিম শাহ জানান, খবর পেয়ে তাদের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার অভিযান চালিয়ে দুই সহোদরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। রামগড়ে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে আরো পাহাড়ধস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশ এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা সদর এবং মানিকছড়ি উপজেলায় খোলা হয়েছে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র। পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌর শহর, কলাবাগান, ন্যান্সিবাজার, শালবন, হরিনাথপাড়া গ্যাপ এবং আঠারো পরিবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী ৩০টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে এসেছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
অন্যদিকে, মানিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ২৩টি পরিবারকে দুইছড়িপাড়া ও মুসলিমপাড়ার দুইটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিনীতা রাণী। এছাড়া দুইছড়ি গ্রামের আগামপাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয় একটি বিহারে ১৬টি পরিবারকে এবং সদরের মুসলিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭টি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে। মুসলিমপাড়া, মাস্টারপাড়া এবং রাজপাড়া এলাকা ঘুরে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী অর্ধশত পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে তাদের দ্রুত সরে যেতে বলা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন বেলা খাবার ও নগদ অর্থসাহায্য প্রদান, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসাসহ রাখা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম আশ্রয়কেন্দ্র স্থায়ী সমাধান নয় উল্লেখ করে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের স্থায়ীভাবে নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হচ্ছে।
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) : পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুর রহমান। তিনি জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং পুলিশ নিহতদের উদ্ধার করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পাহাড়ধস। পাহাড়ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার।
"