নিজস্ব প্রতিবেদক
চিকুনগুনিয়া রোধে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা
চিকুনগুনিয়া রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়াতে ঢাকার ৯২টি পয়েন্টে সাদা অ্যাপ্রন পরে প্রচারণা চালিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাজধানীতে চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের চালানো ওই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ওই সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যে যার অবস্থান থেকে নিজের বাড়িঘর ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখলে এবং কোথাও পানি জমতে না দিলে চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। শুধু চিকুনগুনিয়া নয়, সব রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারেই সবাইকে সচেতন হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘এডিস মশা থেকেই যেহেতু চিকুনগুনিয়া রোগের ভাইরাস ছড়ায়, সেহেতু এই মশার উৎপত্তিস্থল নিধন কার্যক্রম আমরা প্রতীকীভাবে শুরু করেছি। আমাদের এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে সচেতন করা। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এডিস মশা নিধন কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমে একজন নাগরিককে নিজ বাড়ি এবং আশপাশের এলাকায় লক্ষ রাখতে হবে, কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই আমরা এমন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ সালাহউদ্দিন এবং সাংবাদিক-কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টির এই অভিযানে ঢাকা শহরের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এবং মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলসহ সব চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। চিকুনগুনিয়া জ্বরের বাহক এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে এবং এই রোগের ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে মাঠ পর্যায়ে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম, ৯২টি স্পটে এই সচেতনতামূলক কার্যক্রমটি চালাব। কিন্তু সেটা এখন আরো অনেক বেশি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতেই আজকের এই কার্যক্রম। কেবল ঘরের বাইরে নয়, ঘরের ভেতরেও অর্ধস্বচ্ছ পানি, ফুলের টব, ফেলে রাখা কৌটা বা বোতল, পানির ট্যাংকি, ছাদে জমে থাকা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, আবর্জনার স্তূপ বা ডাবের খোসার ভেতরেও জন্ম নেয় এডিস মশা। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা ঘরের ভেতরে ঢুকতে পারেন না। তাই ঘরে ঘরে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে সাদা অ্যাপ্রন পরে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা কাজ করেছে।
মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে এই কার্যক্রম চালান। পুরো নগরীতে তারা চিকুনগুনিয়া জ্বরের বাহক এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে এবং এই রোগ সংক্রান্ত জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে মাঠে থাকেন।’
"