ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
শৈলকুপায় শসার কেজি দুই টাকা!
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় চলতি মৌসুমে শসার ফলন ভালো হয়েছে। চাষিরা আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু এর বাজার এতটাই পড়ে গেছে যে, প্রতি কেজি শসা দুই টাকা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে পানির দামে শসা বিক্রি করে তাদের মাথায় হাত পড়েছে। এ বছর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে কম দামে শসা বিক্রি করে উপজেলার কয়েক হাজার চাষি প্রায় নিঃস্ব হতে চলেছেন। শসা উৎপাদনে দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা। এ অঞ্চলে উৎপাদিত শসা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ত্রিবেনী, মির্জাপুর, দিগনগর, কাঁচেরকোল ও দুধসর ইউনিয়নে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে শসার চাষ হয়েছে। তবে এসব ইউনিয়নের মধ্যে বালাপাড়া, চরগোলকনগর, পদমদি, শেখপাড়া, রামচন্দ্রপুর, সাধুখালী, চরপাড়া, বিষ্ণদিয়া, আনন্দনগর, ভদ্রডাঙ্গা গ্রামে এবার শসার চাষ হয়েছে বেশি।
আনন্দনগর গ্রামের চাষি ইসলাম মিয়া জানান, ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা একমাত্র উপজেলা যেখানকার প্রায় সব গ্রামেই ব্যাপকভাবে শসার চাষ হয়। তাই এখানকার গ্রামগুলো একত্রে শসা গ্রাম বলে পরিচিত। অল্প খরচে ভালো লাভ হওয়ায় দিনের পর দিন শসা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। তিনি বলেন, ‘পচনশীল পণ্য হওয়ার কারণে কোনোভাবে মজুদ করার সুযোগ না থাকায় পানির দরে বাজারে শসা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।’ এ ব্যাপারে শেখপাড়া গ্রামের কৃষক সোলেমান উদ্দিন জানান, সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার সেচ খরচ বেশি পড়েছে।
শেখপাড়া বাজারে শসা কেনার সময় ব্যবসায়ী রেজাউল করিম জানান, ১০ বছর ধরে তিনি এ বাজার থেকে শসা কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। সপ্তাহে তিন দিন কয়েক ট্রাক শসা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। আরেক চাষি হজরত আলী জানান, এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা যায় প্রায় ৬০-৮০ হাজার টাকায়। কিন্তু এ বছর দাম নেই। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ায় আড়তদার ও দালালদের খপ্পরে পড়েছেন বিক্রেতারা।
"