সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
রাজধানীর বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ
‘হালিমের’ উপযুক্ত শাস্তি চায় এলাকাবাসী
ঢাকার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের গান্ধাইল গ্রামের দিনমজুরের ছেলে ও ‘নাঈম আশরাফ’ নামধারী আবদুল হালিমের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছে এলাকাবাসী। তাকে গ্রেফতারের খবর শুনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কাজিপুরের গান্ধাইল গ্রামে গেলে আবদুল হালিমের চাচি বলেন, ‘আমরা যদিও ঘটনাটি নিজ চোখে দেখিনি। টিভি ও খবরের কাগজ দেখে জানতে পারলাম হালিম এ মামলার আসামি। সে যদি দোষী হয়, অবশ্যই তার উপযুক্ত শাস্তি হবে। এটাই স্বাভাবিক।’
গান্ধাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় সে বেঁচে গেছে। গ্রামবাসী অত্যন্ত ক্ষেপে আছে। ধরতে পারলে গণপিটুনি বা তার ভাগ্যে এরকম আর কী ঘটতো তা আল্লাহই জানান। টাউট হালিম যেহেতু আমার ছেলে ও আমার নাম ব্যবহার করে নিজের নাম রেখেছে নাঈম আশরাফ, এ ধরনের নাম দিয়ে সে বিভিন্ন স্থানে প্রতারণা করেছে, তাই আমি বাধ্য হয়ে গত ১৬ মে কাজিপুর থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। আমরা অবশ্যই তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। এলাকায় এসে সে যাদের সঙ্গে ঘুরত, তাদেরও গ্রেফতার করা উচিত।’
গান্ধাইল আলী আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা তাকে খুব একটা চিনতাম না। গণমাধ্যমে খবর দেখে জানতে পারলাম সে আমার স্কুল থেকে ২০০৪ সালে এসএসসি পাস করে চলে গেছে। মিডিয়ায় তার নামের সঙ্গে আমাদের বিদ্যালয়ের নাম আসায় আমরা নিজেরাই বিব্রত। সে যদি ওই ঘটনায় দোষী হয়, অবশ্যই তার শাস্তি হওয়া উচিত। এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে যেহেতু তার নাম এসেছে, অবশ্যই আমরা তার দায়-দায়িত্ব নেব না।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান নিয়াজী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামও ঠিক একই ধরনের মন্তব্য করেন। তারা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি ও কাজিপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি কাজিপুরের বিভিন্ন স্থানে যেসব পোস্টার সাঁটানো হয়েছে, তার সবগুলোই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সে আমাদের দলের কেউ না। সে প্রকৃতই একজন ভ-, প্রতারক ও ঠগবাজ।’
উল্লেখ্য, ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ মার্চ পূর্বপরিচিত সাফাত আহমেদ তার জন্মদিনে দাওয়াত দেয় দুই তরুণীকে। এরপর তাদের বনানীর ‘কে’ ব্লকের ২৭ নম্বর সড়কের ৪৯ নম্বরে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। হোটেলের একটি কক্ষে আটকে রেখে তাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ করে সাফাত ও নাঈম। এ ঘটনা সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিও করানো হয়। সাফাত ও নাঈম ছাড়া মামলার বাকি তিন আসামি হলো- সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ। সবাই গ্রফতার হয়েছে।
"