চট্টগ্রাম ব্যুরো
সেই শিশু ‘একুশ’কে পাচ্ছেন কারা, আদেশ আজ
চট্টগ্রামে ময়লার স্তূপ থেকে উদ্ধারকৃত নবজাতক ‘একুশ’কে জিম্মায় পাচ্ছেন কারা, তা আজ জানা যাবে। গতকাল মঙ্গলবার ১২টি আবেদনের শুনানি হয়েছে আদালতে। আবেদনকারীদের মধ্যে গৃহিণী, শিক্ষিকা, আইনজীবী এবং পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন পেশার নারীরা ছিলেন। তাদের মধ্যে নিঃসন্তান দম্পতিরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন তিন সন্তান হারানো দম্পতিও।
চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু বিষয়ক আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌসের আদালতে আবেদনগুলোর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত বুধবার একুশের জিম্মা নির্ধারণ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন নির্ধারণ করেছেন।
একুশকে জিম্মায় পেতে আবেদন করেন গৃহিণী জেসমিন আক্তার, শিক্ষিকা লুবনা ইয়াসমিন, শাকিলা আক্তার, আইনজীবী চুমকি চৌধুরী, শাহিদা জাহান, শাহানা আক্তার, ইয়াসমিন আক্তার, শবনম শারমিন, পুলিশের এসআই পারভীন, গৃহিণী জান্নাতুল ফেরদৌস, ইসরাত জাহান, গুলশান আক্তার, নাসিমা বেগম, রুকসানা আক্তার, মনসুর আলম চৌধুরী এবং এসআই মো. সাইফুল্লাহ। শেষ চারজন অনুপস্থিত থাকায় মোট ১২ জনের আবেদনের ব্যাপারে শুনানি হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, কয়েক বছরের বিবাহিত জীবনে সন্তান না থাকায় তারা একুশকে জিম্মায় পেতে চান শাকিলা আক্তার এবং চিকিৎসক জাকির হোসেন দম্পতি। ১০ বছরের সংসারজীবনে সন্তান না থাকায় একুশকে জিম্মায় চান পুলিশসদস্য এসআই পারভীন। গৃহিণী জান্নাতুল ফেরদৌস এবং আইনজীবী মো. মোজাম্মেল হোসেন দম্পতির তিনটি শিশুসন্তানই জন্মের পর মারা যাওয়ায় তারাও একুশকে চান।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এমএ ফয়েজ বলেন, যিনি সন্তানের মা হতে পারবেন না বা যার পক্ষে সন্তান নেওয়া সম্ভব নয়, এমন কাউকে এই সন্তান দেওয়া হোক।
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, ‘শিশুটির জিম্মা স্থায়ীভাবে দেওয়া সম্ভব নয়। শুধু সাময়িক জিম্মা দিতে পারি। পরে কখনো শিশুটির বাবা-মা যদি আসে, তখন তারা যদি সম্মতি দেন, তখন জিম্মায় পাওয়া অভিভাবক শিশুটিকে সর্বোচ্চ ১৮ বছর পর্যন্ত জিম্মায় রাখতে পারবেন।’
শুনানি শেষে আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘প্রাণবন্ত একটা শুনানি হয়েছে। একজন শিশুকে জিম্মায় চেয়ে এত আবেদন এটাই প্রমাণ করে যে, আমাদের সমাজের মানুষের মধ্য থেকে এখনো মানবিকতাবোধ হারিয়ে যায়নি। বুধবারই জানা যাবে, একুশকে জিম্মায় পাচ্ছেন কারা।’
প্রসঙ্গত গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর আকবর শাহ থানার কর্নেলহাটে প্রশান্তি আবাসিক এলাকায় একটি ভবনের পেছনে আবর্জনার স্তূপ থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। একুশের রাতে উদ্ধার হওয়ায় আকবর শাহ থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর শিশুটির নাম রাখেন ‘একুশ’। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে শিশুটি।
"