চট্টগ্রাম ব্যুরো
‘আগামী বছর চট্টগ্রামেও হবে মাসব্যাপী বইমেলা’
আগামী বছর থেকে চট্টগ্রামে মাসব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১১ দিনব্যাপী বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মেয়র এ কথা জানান। নগরীর শহীদ মিনার ও মুসলিম ইনসটিটিউট হল প্রাঙ্গণ জুড়ে ১১ দিনব্যাপী একুশের বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খ্যাতিমান প্রকাশক, লেখক ও পাঠকদের মিলনমেলায় পরিণত করা হবে চট্টগ্রামে মাসব্যাপী বইমেলা। বাংলা একাডেমির সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে ঢাকার ন্যায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী বৃহৎ পরিসরে আন্তর্জাতিক মানের বইমেলার আয়োজন করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রকাশক, লেখক ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।
মেয়র বলেন, প্রকাশক, লেখক, কবি সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে সৃজনশীল আয়োজনে বইমেলাকে পাঠকদের কাছে উপস্থাপন করে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে। চট্টগ্রামের বইমেলার এই আবেদন দেশের জেলা-উপজেলা, গ্রাম-গঞ্জে পৌঁছে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বই মনের দরজা খুলে দেয়, কুসংস্কার থেকে মুক্ত করে, জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে। তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সকলকে বই পড়তে ও কিনতে আগ্রহ সৃষ্টি করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। বইয়ের মাধ্যমে অজানাকে জানা যায়, চিন্তার দরজা খুলে যায়, দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, বই পড়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত হওয়া সম্ভব।
মেয়র বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক বাহক চট্টগ্রাম। ১৯৫২ সনে চট্টগ্রামে মহান একুশের প্রথম কবিতা রচনা করেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী। ১৯৬৬ সনে চট্টগ্রাম থেকে বাঙালির বাঁচার দাবি ৬ দফা বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন। মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে হবে এবং প্রমিত বাংলা ভাষার চর্চা করতে হবে।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ১৯৭১ সনে জাতির পিতার পক্ষে বাংলার স্বাধীনতার ঘোষণা কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ দ্বিপ্রহরে ঘোষণা করেন জননেতা এম এ হান্নান।
তিনি বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের সন্তান সূর্যসেন ও প্রীতিলতার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে। ঈশ^রচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, কবি মাইকেল মধুসূদন, বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ, কবি নজরুল ও সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর হাত ধরে বাংলা ভাষার সূদৃঢ় ভিত্তি গড়ে উঠেছে। সেই ধারা আরো বিকশিত করতে হবে।
বইমেলার উদ্বোধনকালে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সিটি করপোরেশনের পতাকা উত্তোলন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। পরে মেয়র বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দেন।
এ সময় প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি নাজমুল হক ডিউক, সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিন, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন, হাসান মুরাদ বিপ্লব, মো. সলিমউল্লাহ বাচ্চু, শৈবাল দাশ সুমন, এস এম এরশাদুল্লাহ, আঞ্জুমান আরা বেগম, মনোয়ারা বেগম মনি, উপসচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম এবং চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সিটি করপোরেশনের বইমেলায় বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি ও চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদসহ ঢাকা এবং চট্টগ্রামের ৫৪টি প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে।
"