মাসুদ রানা, বরিশাল
‘রাজাকারের ১৪ দোসর পাচ্ছেন ভাতা’
বরিশাল গৌরনদী উপজেলার গেজেটভুক্ত ১৪ মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়েছে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মনিরুল হক ও বার্থী ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার মানিক খান এ আবেদন সরকারি দফতরে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি এ আবেদনের অনুলিপি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এবং বরিশাল জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগকারীদের মতে, ইতোমধ্যে গেজেটভুক্ত ১৪ মুক্তিযোদ্ধা ১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনীর দোসর ছিলেন।
অভিযোগ করা হয়েছে, উপজেলার নন্দনপট্টি গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে আবদুল হালিম সরদার, কামিজ উদ্দিন খলিফার ছেলে চুন্নুু খলিফা ও মাহাবুব খলিফা, দলিল উদ্দিন সন্যামতের ছেলে মোসলেম উদ্দিন, তারাকুপি গ্রামের বেল্লাল বেপারীর ছেলে সেকান্দার বেপারী, হোসেম বেপারীর ছেলে মোসলেম বেপারী, মনসুর সরদারের ছেলে মো. শাহ্জাহান সরদার, কটকস্থল গ্রামের মমিন উদ্দিন মাঝির ছেলে শাহে আলম মাঝি, বেজগাতি গ্রামের সুজাউদ্দিন মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন, বাউরগাতি গ্রামের গফুুর খন্দকারের ছেলে আমজেদ খন্দকার, রিয়াজ উদ্দিন শিকদারের ছেলে সেকান্দার শিকদার, সুলতান খানের ছেলে কুদ্দুস খান, বার্থী গ্রামের গফুর তালুকদারের ছেলে আবদুর রব তালুকদার, বেকিনগর গ্রামের আইনউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে খলিলুর রহমান হাওলাদারকে মুক্তিযোদ্ধা গেজেট থেকে বাতিল চেয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মনিরুল হক ও বার্থী ইউনিয়নের সাবেক কমান্ডার মানিক খান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। আবেদনে তারা অভিযোগ করেন স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সাহায্য সহানুভূতি না দেখিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের লোক এবং রাজাকারের ১৪ দোসর মুক্তিযোদ্ধার গেজেটভুক্ত হয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার আনোয়ার রাড়ি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বাতিলের পৃথক দুটি আবেদনে উপজেলার ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত করে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে উপজেলার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট বাতিল করবে বলে আশা করছি।’ গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুব আলম বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ পেলে সংশ্লিষ্ট কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে। এর আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একই উপজেলার শরিকল ইউনিয়নের শাহাজিরা গ্রামের দাবিদার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান খানসহ পাঁচজনের মুক্তিযুদ্ধকালীন কর্মকান্ড তদন্তের বিষয়টি ফাইল চাপা পড়ে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তারাকুপি গ্রামের মৃত বেল্লাল বেপারীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার বেপারী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকায় একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
"