নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ আগস্ট, ২০২০

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি পেল বড় বিনিয়োগ

প্লাজমা দিয়ে ক্যানসারের ওষুধ হবে দেশেই

করোনার সময়ে যখন সব কিছু স্থবির, সব দেশ ঝুঁকছে ভ্যাকসিন তৈরিতে ঠিক তখনই বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ পেল কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা সমমূল্যের এই বিদেশি অর্থ মানুষের প্লাজমা থেকে ক্যানসার ও এইডসের ওষুধ উৎপাদনে ব্যয় হবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি দফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে অরিক্স বায়োটেক নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হাইটেক সিটিতে মানুষের দেহ থেকে বছরে ১২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক বিনিয়োগ, প্রায় ২ হাজার মানুষের উচ্চ বেতনে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বায়োপ্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। যা ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে ব্যাপক অবদান রাখবে। ওরিক্স বায়োটেক লিমিটেড এখন ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। উন্নত বিশ্বে এখন (বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, চীন, জাপান) বায়োটেকনোলজির ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। মূলত হিউম্যান প্লাজমা থেকে বায়োটেক পণ্য উৎপাদিত হয় এইচআইভি এইডস ও ক্যানসার রোগের চিকিৎসায় এসব বায়োটেক ওষুধ এখন ব্যবহার হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে বছরে ১ হাজার ২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে চায় ওরিক্স বায়োটেক লিমিটেড। যার সঙ্গে ২০টি প্লাজমা সংগ্রহ স্টেশন সংযুক্ত থাকবে। প্রতিষ্ঠানটি এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য উন্নত বিশ্বের মান বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে বায়োটেক পণ্য সহজলভ্য হবে।

জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আইসিটি বিভাগ করোনা মোকাবিলায় যে ভূমিকা রেখেছে তা দেশের সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে আইসিটি বিভাগ। লাইভ করোনা টেস্ট, কোভিড-১৯ ট্র্যাকার, টেলিমেডিসিন ও টেলিহেলথ, সহযোদ্ধা-প্লাজমা প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদি বহু উদ্যোগের সুফল পেয়েছে দেশবাসী। এর থেকেই একটি দেশের আইসিটি খাতের অগ্রগতির চিত্র সুস্পষ্ট।’

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কালিয়াকৈরে ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি’ দেশের প্রথম ও বৃহত্তম হাইটেক পার্ক। ২০১৪ সালে আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ সরেজমিনে এই পার্কটি পরিদর্শন করে পার্কের উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ৩৫৫ একর জমিতে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি’তে বর্তমানে ৩৭টি কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে পাঁচটি কোম্পানি উৎপাদন শুরু করেছে। কোম্পানিগুলো এই পার্কে মোবাইল ফোন অ্যাসেম্বলিং ও উৎপাদন, অপটিক্যাল কেবল, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডাটা-সেন্টার প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে। এরই মধ্যে ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এবং প্রায় ১৩ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে হাইটেক পার্কগুলোতে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে আমরা আশাবাদী।

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে আমরা বছরে ১২০০ টন প্লাজমা বিশ্লেষণে সক্ষম প্ল্যান্ট নির্মাণ করব। যার সঙ্গে ২০টি প্লাজমা সংগ্রহ স্টেশন সংযুক্ত থাকবে। ক্যানসার, এইডস, সার্স, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মুখের বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের বায়োটেক ওষুধ তৈরি হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close