শেখ ফুয়াদ, ময়মনসিংহ থেকে

  ১৪ জুলাই, ২০২০

মেয়র টিটুর নেতৃত্বে উন্নয়ন যজ্ঞ

আলোয় ঝলমল ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলা বিভাগ হওয়ায় পুরোনো এই শহর সিটি করপোরেশনে উন্নীত হয়েছে। এতে মেয়র ইকরামুল হক টিটুর নেতৃত্বে শহরে চলেছে উন্নয়নযজ্ঞ। সন্ধ্যা হলেই আলোয় ঝলমল করে ওঠে শহরের মোড়গুলো। দূর হয়েছে অলিগলির দুর্গন্ধ। নিরসন হয়েছে জলাবদ্ধতা। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলছে এডিশ মশা নিধন। সবদিক থেকেই আধুনিক হয়েছে, বদলে গেছে শহরটি।

তিনি ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমে গুরুত্ব সহকারে হাত দেন ময়মনসিংহ জেলা সদর তথা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে। তার জন্য তিনি শহরের অলিগলি মূল বাণিজ্যিক এলাকার পূর্বতন সড়কের পাশের ছোট ছোট ড্রেনগুলো ভেঙে দিয়ে সেখানে পাঁচ ফুট প্রশস্ত ও আট ফুট গভীরতার নতুন ড্রেন নির্মাণ শুরু করেন। তিনি

৩৩ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ করেন। গভীর নলকূপ স্থাপনসহ পানির লাইন নির্মাণ করেন ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ডিজিটাল সেবা দেওয়ার জন্য তিনি ডিজিটাল কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। যার সিংহভাগ কাজ তিনি সম্পন্ন করতে পেরেছেন। দৈর্ঘ্য হিসেবে ১৫ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ হয়। ড্রেনগুলো আট ফুট প্রশস্ত কোন স্থানে তিন থেকে চার ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত। এই দীর্ঘ ড্রেন নির্মাণকাজ করার ফলে শহরে এখন জলাবদ্ধতা নেই বললেই চলে। এরপর বৃষ্টির পানিতে শহর জলাবদ্ধ হয়ে যাওয়া আরো কমিয়ে আনার জন্য তিনি সিকে ঘোষ রোড, ডেঙ্গু ব্যাপারী রোড, নাটক গোরলেন, বাসাবাড়ী এলাকা, দুর্গাবাড়ী রোড এবং ছোট বাজার হয়ে জুবিলী কংগ্রেস রোড হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদীতে বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার জন্য আন্ডারপাস ওয়াটার পাসিং নির্মাণ করেন। বিপুল অর্থ ব্যয়ে এ ধরনের ড্রেন নির্মাণ করেন। ড্রেন নির্মাণ করে কভার্ড করে দেন যাতে পথচারী ফুটপাত ধরে হাঁটতে পারে। এতে আগের তুলনায় অত্যাধুনিক হয়েছে শহরটি। বিদেশি আর্থিক সহায়তা ও সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে এসব কাজ হয়েছে।

মেয়র টিটু প্রতিটি সড়ক দ্বীপে আলোকের প্রজ্জ্বলনসহ ব্যঞ্জনাময় চোখ ধাঁধানো আকর্ষণীয় স্থাপত্যশৈলী নির্মাণ করেন। শহরের প্রতিটি লাইট পোস্টে সন্ধ্যার পরই আলোক বাতি শহরকে আলোর বন্যায় ভাষিয়ে দেয়। তিনি বর্জ্য ফেলার জন্য ৩৬টি ওয়ার্ডে একাধিক ডাস্টবিন নির্মাণ করেছেন। বর্জ্য সংগ্রহ করে শহরের বাহিরে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে বর্জ্য ফেলে দেওয়া হয়। পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকটি মার্কেট ও প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভার নিজস্ব ওয়াটার ট্যাংক থেকে দিনে দুবার খাবার পানি সরবরাহ করা হয়। মেয়র ইকরামুল হক টিটু সার্বক্ষণিক খবর রাখেন ও পরিদর্শন করেন। চলতি বর্ষায় ড্রেন থেকে বর্জ্য ও আবর্জনা উঠানো চলছে। এডিস মশা মুক্ত করতে সবগুলো ড্রেন ও জমে থাকা পানিতে প্রতি সপ্তাহে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সিটি করপোরেশন থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জনসাধারণের মাঝে মাস্ক ও সেনিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি নির্ধারিত সময়ে দেওয়া হয়। বিগত লকডাউনে সিটি করপোরেশন অসহায়-দরিদ্র মানুষদের মাসে দুবার চাল ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে পাকিস্তান আমল থেকে শহরের বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার জন্য তিন কিলোমিটার লম্বা আট ফুট প্রশস্ত ও ১০ ফুট গভীরতার মাকরজানি নামে একটি খাল নির্মাণ (বড় ড্রেন) করা হয়। খালটি শহরের ভেতর দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মধ্যে দিয়ে ঘন ঘন দিক পরিবর্তন করে জেলার ফুলবাড়ীয় রোডের পাশে একটি নদীতে পানি নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বৃষ্টি হলে জমা করা বৃষ্টির বিপুল পরিমাণ পানি তিন কিলোমিটার পার হয়ে নেমে যেতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লেগে যেত। শহর পানির নিচে তলিয়ে থাকত এখন পূর্বোক্ত ব্যবস্থা করায় পানি সহজেই ব্রহ্মপুত্র নদীতে নেমে যায়। মাকর জানি খালটি প্রায় ৮০ বছর পূর্বে নির্মিত হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রেনে জমা করা বিপুল মাটি ও বর্জ্য অপসারন করা হয় না।

শহরে ট্রাফিক জ্যাম নিরসরনের লক্ষ্যে ইকরামুল হক টিটু অন্তত চারটি নতুন সড়ক সৃজন করেছেন। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন আরো অনেক কাজ হবে। প্রতিবেদককে ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বললেন, ‘আমি ভারপ্রাপ্ত অবস্থায় মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করি। পরে সেই পরিকল্পনা প্রশাসনকে নিয়ে আরো ব্যাপক ও বিস্তৃত করি, সে মোতাবেক ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বাকিটা দ্রুত শেষ হবে। এছাড়া বিভাগকে অত্যাধুনিক করার জন্য আমি দ্রুত আধুনিক প্রকল্প নিয়ে কাজ আরম্ভ করব। তিনি বলেন ময়মনসিংহ বিভাগকে আমরা মডেল বিভাগে পরিণত করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close