পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ১১ জুলাই, ২০২০

ভারতে এক দিনে রেকর্ড ২৬ হাজারের বেশি আক্রান্ত

কলকাতায় লকডাউনে মানবিক পুলিশ

উত্তর থেকে দক্ষিণ, কলকাতার কনটেনমেন্ট জোনগুলোতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর রাস্তায় নেমে পড়েছে পুলিশ। কোনো এলাকায় তৈরি হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, আবার কোথাও প্রত্যেক পরিবারের একজনের ফোন নম্বর নিয়ে রাখছেন সংশ্লিষ্ট থানার আধিকারিকরা। পুলিশ অফিসারদের ফোন নম্বর দেওয়া হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা প্রত্যেক অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন, লকডাউনে কোনো বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যাতে সমস্যায় না পড়েন। সেই নির্দেশ মেনে যে প্রবীণ নাগরিকরা কলকাতা পুলিশের প্রকল্প প্রণামের সদস্য, তাদের খবরাখবর নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন পুলিশ অফিসাররা। যারা সদস্য নন, তারাও যাতে অসুবিধায় না পড়েন, সেদিকেও রয়েছে পুলিশের নজর। এদিকে, নতুন করে সংক্রমণে বড় লাফ দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে আট লাখের দোরগোড়ায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৫০৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের নিরিখে যা এখনো অবধি সর্বোচ্চ। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে আক্রান্ত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮০২ জন। আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৭৫ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হলো ২১ হাজার ৬০৪ জনের।

এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৬৬৭ জনের। রাজধানী দিল্লিতে মৃত্যুসংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ২৫৮-তে। গুজরাটেও মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজার পার করেছে। সেখানে দুই হাজার আটজন মারা গেছে। ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে তামিলনাড়–তে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬৫ জন। উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও মধ্য প্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর ও বিহার। আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা পাঁচ লাখ ছুঁইছুঁই। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ১৩৫ জন সুস্থ হয়েছেন।

কলকাতা শহরের কনটেনমেন্ট জোনগুলোতে লকডাউন শুরু থেকেই মাইক নিয়ে প্রচার করছে পুলিশ। ব্যারিকেড ভেঙে কেউ যাতে বের হওয়ার চেষ্টা না করেন, সে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে প্রত্যেককে। লকডাউন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ও ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা। যাতে বাসিন্দারা অসুবিধা না পড়েন, সেদিকেও নজর আছে পুলিশের। সতর্কতা মেনে পৌরসভার সবজির গাড়ি এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে। বাসিন্দারা মাস্ক পরে ও সামাজিক দূরত্ব মেনে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতেও পারবেন। এ ছাড়াও কনটেনমেন্ট জোনে কেউ বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেদিকে নজরদারির জন্য পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোরও ব্যবস্থা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close