সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ০৯ জুলাই, ২০২০

গরিবের সেই চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত

অর্থের মোহ নেই, দিন নাই রাত নাই মানবসেবায় প্রতিনিয়ত ছুটেছেন ডা. এবাদুল্লাহ্ সরদার। রোগী প্রেসক্রিপশন ফি নিতেন ৫ টাকা। কাগজপত্রের দাম বৃদ্ধি ও সহকারীদের টাকা বাড়তি দিতে গিয়ে ফি নির্ধারণ করেন ১০ টাকা। গরিবের ডাক্তার হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন দেশজুড়ে। সেই গরিবের চিকিৎসক এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। অবস্থা খুববেশি ভালো নয় বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।

সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকার মোতালেব সরদারের ছেলে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবাদুল্লাহ্ সরদার। শহরের পাকাপোলের মোড় এলাকায় খান মার্কেটে দ্বিতীয়তলায় ৪০ বছর আগে গড়ে তোলেন নওয়াজ ক্লিনিক। সেখানেই নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করে আসছেন এই চিকিৎসক। ২০০৯-১০ সালে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করেন। তার তিন ছেলেই এখন স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি করেন। এবাদুল্লাহ্ সরদারের মেঝো ছেলে নেওয়াজ ওয়াহিদ জিমি জানান, আব্বাকে অনেক বার বলেছি করোনার মধ্যে চেম্বারে যাওয়ার দরকার নেই। আমরা তিনভাই চাকরি করি। বসিয়ে খাওয়াতে পারব। রোজগার লাগবে না। তবুও আব্বা কথা শোনে না। বলে, দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা এসে বসে থাকে। তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া জরুরি। করোনার সময় অন্য ডাক্তার রোগী দেখে না। এখন আমিও যদি না দেখি তবে অসুস্থ মানুষরা কোথায় যাবে। এসব বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে চেম্বারে রোগী দেখতে।

নেওয়াজ ওয়াহিদ জিমি আরো বলেন, চেম্বারে গিয়ে সকাল বিকাল রোগী দেখত। বাড়িতে ফিরেছে রাত ৮টায়। কিছুদিন আগে আমার চাচা আব্বাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেছে। চাচার করোনা ছিল। এরপর কখন যে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়ছে সেটি বুঝতে পারছি না। ১০-১২ দিন আগে আব্বার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। গত শুক্রবার সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু বলেন, অর্থের মোহ ত্যাগ করে অসহায় মানুষদের নামমাত্র টাকায় চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন ডা. এবাদুল্লাহ্। গরিবের ডাক্তার হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন সর্বত্র। তার অসুস্থতার খবর শুনে ব্যথিত হয়েছেন সব শ্রেণি পেশার মানুষ। দোয়া করছেন তার সুস্থতার।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. মানস কুমার জানান, এবাদুল্লাহ্ স্যারের শরীরে করোনা পজেটিভ। জ্বর ও তীব্র শ^াসকষ্টে ভুগছেন। অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। তবে অবস্থা খুববেশি ভালো নয়। এখন অবস্থা ভালো না খারাপের দিকে যাবে সেটি কিছু দিন না গেলে বলা যাবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close