আদালত প্রতিবেদক

  ০৩ জুলাই, ২০২০

হাইকোর্টে প্রতিবেদন

চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ পায়নি স্বাস্থ্য অধিদফতর

চিকিৎসা না দিয়ে সাধারণ রোগী ফেরত পাঠানোর কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে রোগী ফেরত পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক মো. আমিনুল হাসানের স্বাক্ষরে হাইকোর্টকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এদিকে প্রতিবেদন আসার বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের সব হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লক্ষ্য করছি এমন ঘটনার খবর প্রকাশ পাচ্ছে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের খবরগুলো নির্ধারিত তারিখে পরবর্তী শুনানির দিন মহামান্য আদালতে উপস্থাপন করব। এদিকে প্রায় একই কথা বলেন রিটকারী অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ১১ জুন দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় কোভিড ও ননকোভিড রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়। তাছাড়া অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা থেকে ১৮ জুন দেশের সব হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোয়কে নির্ধারিত ফির (ইউজার ফি) বিনিময়ে (কোভিড-১৯) রোগীর চিকিৎসা অব্যাহত রাখার জন্য এবং ২৯ জুন সব বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় সব ধরনের রোগীদের (কোভিড/ননকোভিড এরিয়া চিহ্নিত/বিভাজনপূর্বক) সব ধরনের চিকিৎসা প্রদানের অনুমোদন প্রাপ্ত ওআরটি পিসিআরের সুবিধা সম্বলিত যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে চিকিৎসা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব নির্দেশ পালনে অপারগতা প্রকাশকারী/ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তাদের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত/বাতিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে স্মারকে উল্লেখ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি তাই কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে এ ধরনের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে তিনটি বিষয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কিনা বিষয়ে বলা হয়, কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন কোভিড-১৯ রোগীর কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত বা অযৌক্তিক ফি আদায় না করতে পারে সে বিষয়ে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য এবং রি-ফিলিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করার ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে (ভান্ডার ও সরবরাহ) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাইকোর্টে পৃথক পৃথক পাঁচটি রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গত ১৫ জুন এক আদেশে চিকিৎসা না দিয়ে সাধারণ রোগীদের ফেরত পাঠানোর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।

অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সাধারণ রোগীদের ফিরিয়ে দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন আইনজীবী এ এম জামিউল হক, মো. নাজমুল হুদা, মোহাম্মাদ মেহেদী হাসান এবং ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।

এছাড়া সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের নির্দেশনা চেয়ে জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে আর একটি রিট করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন। আর করোনা চিকিৎসায় সরকারি নির্দেশনার বাইরে অতিরিক্ত অর্থ না নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রামণের প্রেক্ষাপটে ঢাকা শহরকে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা চেয়ে রিট করেন অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল ইসলাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close