নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ জুলাই, ২০২০

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশুদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানুষের ইমিউনিটি বাড়লে ভাইরাস সহজেই তাকে কাবু করতে পারে না। আর মানুষের ইমিউনিটি নির্ভর করে ফুড-সাইকেলের ওপর। আমাদের যেমন হাসপাতাল তৈরি করতে হবে, চিকিৎসার মান উন্নয়ন করতে হবে; তেমনি মানুষকে বিশুদ্ধ এবং ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশুদ্ধ ও পুষ্টি-সমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই।গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারের উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, খাদ্যে ভেজাল থাকলে মানুষ সহজেই ছোটখাটো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এ বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অধিকাংশ মানুষ প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ায় তাদের ইমিউনিটি ফল করেছিল (কমে গিয়েছিল)। ফলে যুদ্ধের চাইতেও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ছোটখাটো ভাইরাসের আক্রমণে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। কিন্তু এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা যদি শুধু ওষুধ কিনি আর হাসপাতালের যন্ত্রপাতি কিনি; তাহলে তো স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে না। কারণ আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজন প্রপার নিউট্রিশন। এ নিউট্রিশন যদি আমরা সঠিকভাবে না পাই, তবে তো ওষুধ আর হাসপাতাল দিয়ে কাজ হবে না। তাই আমাদের ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। আশা করছি, এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারের সুফল আমরা সবাই পাব। বিশেষ করে ঢাকাবাসী। তবে পর্যায়ক্রমে সারা দেশের জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’

আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটিকে ইউরোপীয় দেশসমূহের মতো উন্নত মানের উল্লেখ করে এটি নগরবাসীকে ভেজালমুক্ত খাবার উপহার দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর এই দেশ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা

জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই ক্ষত থেকে দেশকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য এবং যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্নত সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ সময় ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আগে যখন বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল পণ্যের ওপর জরিমানা করা হতো, তখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিত। তাদের যুক্তি ছিল, আমরা তাদের খাদ্যসামগ্রীর যথাযথ মান পরীক্ষা করেছি কি না বা করলেও পরীক্ষায় তার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে কি না? ফলে এ রকম অনেকগুলো মামলা এখনো ঝুলে আছে। কিন্তু এই ল্যাব উদ্বোধনের ফলে এখন থেকে খাদ্যে ভেজালকারীরা তাদের মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে আরোপিত জরিমানা নিয়ে আর কোনো ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘এই ল্যাবটা আন্তর্জাতিকভাবে অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব। ফলে এখন থেকে আমরা যেকোনো পণ্যের মান সঠিকভাবে নিরূপণ করতে পারব এবং ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। তাই ঢাকাবাসীর জনস্বাস্থ্য তথা স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করতে এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) শরীফ আহমেদ, সচিব আকরামুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এডিবির অর্থায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের অধীনে সাতটি সিটি করপোরেশনে এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। উদ্বোধন হওয়া আধুনিক পরীক্ষাগারটি তারই একটি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close