প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৬ জুন, ২০২০

ক্লোরোকুইন নিয়ে নিবন্ধ প্রত্যাহার করল ল্যানচেট

কোভিড-১৯ বা নতুন করোনাভাইরাস চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে ম্যালয়েরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বা ক্লোরোকুইন ব্যবহারে সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক নিয়ে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রত্যাহার করেছে বিশ্বখ্যাত জার্নাল ল্যানচেট। যে তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়েছিল তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠায় বৃহস্পতিবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যেমে গতকাল শুক্রবার বলা হয়েছে, চার গবেষকের মধ্যে তিনজনই সম্মতি দেওয়ার পর গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তারা একটি স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানির বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন। ছয় মহাদেশের ৯৬ হাজার রোগীর তথ্য বিশ্লেষণের দাবি করে গত মাসে ওই গবেষকরা ল্যানচেটে একটি গবেষণা প্রকাশ করেন। ওই নিবন্ধে গবেষকরা নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন ব্যবহার নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। বলা হয়েছিল, ক্লোরোকুইন প্রয়োগে করোনা উপশমের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং ওষুধটির প্রয়োগে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হওয়ার পাশাপাশি হৃদযন্ত্রে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। গবেষণার এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে গত ২৫ মে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ রাখতে বলেছিল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বেশ কিছু দেশও ক্লোরোকুইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। গত বুধবার ফের সংস্থাটি করোনাভাইরাস চিকিৎসায় পরীক্ষামূলকভাবে ওষুধটি ব্যবহারে সম্মতি দেয়। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ডা. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘ডব্লিউএইচওর গবেষক দল যাচাই করে দেখেছেন যে, ক্লোরোকুইনের প্রয়োগে করোনা রোগীদের ঝুঁকিতে পড়ার প্রমাণ নেই।

যে স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানির তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ল্যানচেটে প্রকাশিত গবেষণাটি করা হয়েছিল, সেই সার্জিস্ফিয়ারের কর্মীদের তথ্য পর্যালোচনা কিংবা বৈজ্ঞানিক গবেষণার কোনো অভিজ্ঞতা নেই বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ক্লোরোকুইন নিয়ে ল্যানচেটে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে যুক্ত থাকা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনদীপ মেহরা, ইউনিভার্সিটি হসপিটাল জুরিখের ফ্র্যাঙ্ক রাশিৎজকা এবং ইউনিভাসির্টি অব উটাহর গবেষক অমিত প্যাটেল এক বিবৃতিতে বলেন, তথ্যের প্রাথমিক উৎসের সত্যতা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না।

ল্যানচেটের বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, সার্জিস্ফিয়ার এবং গবেষণায় তাদের দেওয়া তথ্য নিয়ে ‘প্রশ্ন উঠেছে’। অথচ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি সার্জিস্ফিয়ারের ‘ত্রুটিপূর্ণ’ তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ডব্লিউএইচও এবং বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছিল। তবে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় অখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠানের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা প্রতিবেদন ছাপিয়ে তা আবার ল্যানচেটের মতো বিশ্বখ্যাত জার্নাল থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখন অন্যান্য গবেষণা নিয়েও সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close