পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ০২ জুন, ২০২০

ভারতে বিপদ বাড়ছে মসজিদে কোয়ারেন্টাইন

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই লাখ

বিভিন্ন রাজ্যে নিজের বাড়িঘরে ফিরে যাচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা, আসছেন পশ্চিমবঙ্গেও। আর সেই সঙ্গেই ভারতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা। বিভিন্ন জেলায় লাফিয়ে বাড়া করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান থেকেই চিত্রটা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে একাধিক স্কুলে করা হচ্ছে শ্রমিকদের জন্যে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। কিন্তু তাতেও যে কুলোচ্ছে না। এমনই এক সময় এগিয়ে এসেছে নদিয়ার শান্তিপুরের গোপালপুর পুরাতন মসজিদ কমিটি। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন করেছিলেন শ্রমিকদের জন্যেই সবাকেই মানবিকভাবে এগিয়ে আসার। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে গোপালপুর পুরাতন মসজিদ কমিটি। মহারাষ্ট্র থেকে ওই এলাকায় ফিরেছেন অনেক পরিযায়ী শ্রমিক। তাদের জন্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে মসজিদের একাংশ। বাকি অংশে মসজিদের অন্যান্য কাজকর্ম চলছে।

কেন এমন সিদ্ধান্ত, মসজিদ কমিটির সভাপতির কথায়, মানুষ বাঁচলেই ধর্ম বাঁচবে। এলাকার ছেলেরা পেটের জন্যে অন্য রাজ্যে গিয়েছিল। এখন ফিরে এসেছে। ওদের পাশে তো দাঁড়াতেই হবে। তাই মসজিদের একাংশ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার জন্যে। মসজিদের অন্যান্য কাজে যুক্ত মানুষজন এগিয়ে এসেছেন ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ভালোমন্দ দেখভাল করতেই। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অন্য রাজ্য থেকে আগত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ক্ষোভও দেখা দিচ্ছে। বাধা দেওয়া হচ্ছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার গড়তেও। আর সেখানে কিনা ব্যতিক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে শান্তিপুরের ওই মসজিদ। এদিকে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজারের গন্ডি পেরিয়ে গেছে। পাশাপাশি বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে ভারত চলে এসেছে নবম থেকে সপ্তম স্থানে। টপকে গেছে জার্মানি ও ফ্রান্সকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৩৯২ জন। এই বৃদ্ধির জেরে আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়–, দিল্লি ও গুজরাট। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। এর মধ্যেই দেশে কৃষকদের হাতে যাতে আরো টাকা আসে, অর্থাৎ উৎপাদিত ফসল থেকে কৃষকরা যাতে আরো টাকা পান, সেজন্য আরো ১৪টি ফসলের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবারের ক্যাবিনেট বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তা ও আর্থিকবিষয়ক ক্যাবিনেট বৈঠকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং খুচরা বা রাস্তার বিক্রেতাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় মোদি সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির প্রথম দিনেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নয়দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণসহ অনেকেই। বৈঠকে, পাশাপাশি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার বৈঠকে। হকার বা ফুটপাথের দোকানদারদের ১০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাবড়েকর। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার জানিয়েছেন, কৃষকদের খারিফ শস্যের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হবে। এবার ধানের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ধার্য করা হয়েছে ১ হাজার ৮৬৮ টাকা প্রতি কুইন্টাল।

পাশাপাশি জোরদার হচ্ছে, স্বদেশীর বার্তাও। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্যারামিলিটারি ক্যান্টিনে আর বিক্রি হবে না আমদানিকৃত এক হাজারটি পণ্য। মেড ইন ইন্ডিয়া প্রচারকে জোরদার করতে এই সিদ্ধান্ত। জানা গেছে, সেই এক হাজারটি পণ্যের বদলে দেশে তৈরি পণ্য বিক্রি প্যারামিলিটারি ক্যান্টিন। গত মাসেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ গিয়েছিল, ১ জুন থেকে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পণ্য বিক্রি করা হবে এই ক্যান্টিনগুলোকে। ঘরোয়া কুটির ও এমএসএমই শিল্পের প্রচার বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত। জানা গেছে, নিউটেলা, কিন্ডার জয়, হরলিক্সের মট পণ্য বিক্রি হবে না সেই ক্যান্টিনগুলোতে। ঘরোয়া কাজে ব্যবহৃত কিছু সামগ্রী যেমন মাইক্রো ওয়েভসহ ব্র্যান্ডেড ঘর সাজানোর পণ্য, বিক্রি হবে প্যারামিলিটারি ক্যান্টিনে। এমনটাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর। কয়েকটি বিদেশি সংস্থা যেমন স্কেচার, ফ্যারেরো, রেড বুল, ভিক্টারিনিক্সের মতো সংস্থার পণ্য পাওয়া যাবে না বলেই খবর।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close