যশোর প্রতিনিধি

  ০৪ এপ্রিল, ২০২০

সবজিতে ‘লোকসানের মুখে’ যশোরের চাষিরা

যশোরের সবজি ভান্ডার নামে পরিচিত সাতমাইল এলাকার চাষিরা জানিয়েছেন, সবজির দাম না পেয়ে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মুখে দেশের অন্য প্রায় সবকিছুর মত যানচলাচলও প্রায় বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষিপণ্য দূরের বাজারে নেওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্যাপারীরা বলছেন, সবজি বহনে তাদের খরচ বেড়েছে প্রায় দেড় গুণ। আবার পাইকারি বাজারে নিয়ে তারা দাম পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ।

গতকাল শুক্রবার সাতমাইল বাজারে পটোল নিয়ে আসা আলী হোসেন বলেন, অন্য বছর এ সময় এক কেজি পটোল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতো। এর কম হলে চাষের খরচ উঠে না। কিন্তু করোনাভাইরাসের ধাক্কায় সেই পটোল ২৫ থেকে ২৮ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে বলে জানান যশোর সদর উপজেলার নাটুয়াপাড়া গ্রামের এই কৃষক।

বড় হৈবতপুর গ্রামের শুকুর আলী বলেন, বাঁধাকপি বেচতে হলো প্রতিটা ছয় টাকায়। এতে সার-কীটনাশক ও তেলের খরচই উঠবে না। এর কারণ হিসেবে ব্যাপারীরা বলছেন, যান-চলাচল প্রায় বন্ধ থাকায় তাদের পরিবহন খরচ বেড়েছে। আবার বড় বড় শহরের পাইকারি বাজারে তারা দাম পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সবজি ব্যাপারী আনোয়ার হোসেন বলেন, গত রোববার হাটে ৩২ টাকা কেজি পটোল কিনে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ২৫ টাকা করে বেচতে হয়েছিল। কারণ বড় পাইকাররা দাম দিচ্ছেন না। সাতমাইলের সবজি ব্যাপারী আবদুর রহমান জানালেন পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কথা।

তিনি বলেন, আগে ঢাকায় যেতে ট্রাক ভাড়া লাগত ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। এখন ভাড়া নিচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। এতে মালের দাম বেশি পড়লেও আমরা ঢাকায় সবজি নিয়ে দাম পাচ্ছি না। সাতমাইল থেকে তরকারি কিনে ঢাকাসহ বাইরের জেলাগুলোয় নিয়ে দাম পাচ্ছি না। খুচরা বাজারে ক্রেতা সংকট দেখিয়ে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে তরকারি দাম। যশোরে সারা বছর সবজি আবাদ হয়। এ জেলায় বছরে গড়ে ৮ হাজার মেট্রিক টনের বেশি সবজি উৎপাদন হয় বলে যশোর আঞ্চলিক কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতি হেক্টরে গড়ে ২৩ থেকে ২৫ টন করে সবজি উৎপাদন হয়। সম্প্রতি কৃষি বিভাগ সবজি উৎপাদনে যশোরকে প্রথম ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের কারণে সবজির দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।

সাতমাইল বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পটোল ২৫ থেকে ২৮ টাকা, মুলা ১৮, উচ্ছে ৩০, বেগুন ৮, ঢ্যাঁড়শ ১০, শিম ১৫, লাউ প্রতিটি ১০ থেকে ১২ টাকা, বাঁধাকপি প্রতিটি ৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close