জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

  ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

সুবীর নন্দীর বাড়ি পুনরুদ্ধার ও পাঠাগার নির্মাণের দাবি

দীর্ঘদিন অযত-অবহেলার পর এবার বেদখল হয়ে গেছে হবিগঞ্জের কৃতী সন্তান স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীর পৈতৃক ভিটা। তাদের জমিদারবাড়ির পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে এখন চলে বখাটেদের আড্ডা। রাতের আঁধারে চলে অসামাজিক কার্যকলাপ। এ নিয়ে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বাড়িটি উদ্ধার এবং সুবীর নন্দী স্মৃতি পাঠাগার ও জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, বানিয়াচং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নন্দীপাড়া মহলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুবীর নন্দী। কয়েক একর জায়গাজুড়ে তার বাড়িতে রয়েছে বিশাল পুকুর ও শ্মশান। এছাড়াও রয়েছে ভূমি অফিস ও কোর্ট বিল্ডিং। কিন্তু অযতœ-অবহেলায় বাড়িটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলে রেখেছে। বাড়িটি সন্ধ্যার পর পরিণত হয় নেশাখোরদের আখড়ায়। চলে অসামাজিক কর্মকান্ড। শিল্পীর বাড়িতে এমন কার্যক্রম মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয়রা। তবে প্রশাসন বলছে, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রত্মতাত্ত্বিক অধিদফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী ইমদাদুল হক বলেন, সুবীর নন্দীর পৈতৃক ভিটা উদ্ধার করে এখানে স্মৃতি জাদুঘর কিংবা গণপাঠাগার তৈরি করে তার স্মৃতিকে ধরে রাখার দাবি জানাই। এই শিল্পী আমাদের বানিয়াচংবাসীর গর্ব। তাই আমরা চাই, তার এই শেষ স্মৃতিটুকু আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকুক।

সুবীর নন্দীর বাল্যবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক বলেন, সুবীর নন্দীর ইচ্ছা ছিল তাকে যেন হবিগঞ্জে দাহ করা হয়। কিন্তু সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তাই আমাদের দাবি সুবীর নন্দীর স্মৃতিরক্ষার্থে তার পৈতৃক ভিটা জমিদারবাড়ি উদ্ধার করে এখানে জাদুঘর তৈরি করে, সুবীর নন্দী সম্পর্কে জানার সুযোগ তৈরি করা হোক।

সুবীর নন্দীর বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ ও বেদখল হওয়া জমি পুনরুদ্ধার করে সংস্কৃতি চর্চার জন্য সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বানিয়াচং উপজেলা সাধারণ সম্পাদক কাজল চ্যাটার্জি।

হবিগঞ্জ জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব রায় সুজন বলেন, প্রয়াত এ স্বনামধন্য শিল্পীর শেষ স্মৃতি পৈতৃক বাড়িটি দখলমুক্ত করাসহ বাড়িটিকে সংরক্ষণ করে সুবীর নন্দীর স্মৃতিধারণ ও সংস্কৃতি চর্চার প্রতিষ্ঠান করার জোর দাবি জানাই।

একই দাবি স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন হবিগঞ্জ সুর বিতানের সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজলের। এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন খন্দকার বলেন, বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এরই মধ্যে প্রত্মতাত্ত্বিক অধিদফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তারা প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাদুঘরে রূপান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close