চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতি

পতাকার মান রক্ষা করা সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব

জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একই সঙ্গে বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে লালিত হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। গতকাল রোববার নগরীর হালিশহর আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুল প্রাঙ্গণে ১, ২, ৩ ফিল্ড ও ৩৮ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্ট আর্টিলারির জাতীয় পতাকা প্রদান অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি।

‘জাতির পিতা আধুনিক সশস্ত্র বাহিনীর রূপকার’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী যেকোনো দেশের জন্য অপরিহার্য। বর্তমান সরকার জাতির পিতা কর্তৃক প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে আর্টিলারি রেজিমেন্টের উন্নতি সাধনে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে তিনটি আর্টিলারি ব্রিগেড এবং একটি এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ব্রিগেড সৃজন করা হয়েছে। ইউনিটগুলোর যুদ্ধক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ফিল্ড গান, অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স গান, ক্ষেপণাস্ত্র, কম্বাট সিমুলেটর, বিভিন্ন ধরনের রাডার, অত্যাধুনিক লোকেটিং সরঞ্জামাদি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও চীন এবং ইউরোপীয় দেশ থেকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন গান, রাডার এবং যানবাহন রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির ইউনিটগুলোতে সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দুর্বার ও অব্যাহত উন্নয়নের ধারায় এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারির প্রশিক্ষণ ফায়ার পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরনের টার্গেট ড্রোন স্থানীয়ভাবে উন্নয়নের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশের আকাশ প্রতিরক্ষাকে আরো সুসংহত করতে সংযোজিত হয়েছে এমএলআরএস এবং মিসাইল রেজিমেন্ট। আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীতে অত্যাধুনিক বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, আর্টিলারি গান এবং মডার্ন ইনফ্যান্ট্রি গেজেট ইত্যাদি সংযোজন করে সেনাবাহিনীর আভিযানিক সক্ষমতাকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, আবহমান কাল থেকেই যুদ্ধের ময়দানে জাতীয় মর্যাদার প্রতীক পতাকা বহনের রীতি আছে। পতাকা হলো জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সম্মান এবং মর্যাদার প্রতীক। তাই পতাকার মান রক্ষা করা সকল সৈনিকের পবিত্র দায়িত্ব। জাতীয় পতাকা বহনের দুর্লভ সুযোগ সবার জীবনে আসে না। পতাকা পাওয়া সেনা সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কর্মদক্ষতা, কঠোর অনুশীলন এবং কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতি হিসেবে যে পতাকা আপনারা পেলেন, তার মর্যাদা রক্ষার জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা সবসময় প্রস্তুত থাকবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ইউনিটের সদস্যরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত থেকে জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে পিছপা হবে না।

মাতৃভূমির অখ-তা রক্ষার পাশাপাশি জাতির যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি আশা করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিটি সদস্য বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং সেনাবাহিনী তথা দেশমাতৃকার সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির ইউনিটগুলোকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে জাতীয় পতাকা দেওয়া হয়। এর সূত্র ধরে সেনাবাহিনীর ১, ২ ও ৩ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি এবং ৩৮ এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্ট আর্টিলারি পেয়েছে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, ওয়াসিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মন্ত্রী পরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close