নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহযোগিতা করবে সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্তিত। কেউ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ দিন একনেক সভায় ১৩ হাজার ৬৩৯ কোটি ১ লাখ টাকা খরচে ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ৮ হাজার ৮৮৬ কোটি ৪৪ লাখ, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৯৩ কোটি ১৬ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বর্জ্য নিয়ে আমাদের সবার মাথাব্যথা এই মুহূর্তে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্তিত প্রধানমন্ত্রী। সরকারও চিন্তিত এটা নিয়ে। (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে) নানা ধরনের প্রস্তাব আসছে। একটা প্রস্তাব নিয়ে আজকে আলোচনা হচ্ছিল। একজন মন্ত্রী বর্জ্যকে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চান। বিদেশি কোনো কোনো কোম্পানি আসতে চায়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে-ই, আসুক। আমরা সহযোগিতা করব। যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে এবং এটা আমাদের পরিবেশ ও চাহিদার সঙ্গে মিলেমিশে হয়, আমরা (সহযোগিতা) করব।

প্রধানমন্ত্রীর অন্যান্য নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, শহরে আধুনিক কসাইখানা চাই। এখানে-সেখানে গরু জবাইয়ের স্বাভাবিক প্রবণতা আছে আমাদের। সেটা কমে আসা উচিত। শহরের জন্য আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ করা উচিত। কিছু কিছু কসাইখানা নির্মিত হয়েছে। কোথাও কোথাও আন্ডার ইউটিলাইজ (ব্যবহারাধীন) আছে। সেগুলো যেন যথাযথভাবে ব্যবহার হয়, সেগুলোর জন্যও বলেছেন তিনি।

ব্রিজ নির্মাণ করলেও বিকল্প ব্যবস্থা রাখার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার এ নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ব্রিজ যতই বানাই না কেন, ইমার্জেন্সি ঘাট যেন থাকে। কোনো কারণে ব্রিজের যদি ক্ষতি হয়ে যায়, যাতে ইমার্জেন্সি ফেরি ব্যবহার করতে পারি। কথা হলো ওই জায়গা যেন ব্লক না হয়। রাতারাতি নৌকা এনে আমরা যেন পারাপারের ব্যবস্থা করতে পারি। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তিনটি প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ‘নোয়াখালী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হাজী কামাল উদ্দীন সড়ক (বেগমগঞ্জের গ্লোব ফ্যাক্টরি থেকে কবিরহাটের ফলাহারী পর্যন্ত) (জেড-১৪৫৩) উন্নয়ন’ প্রকল্পে খরচ হবে ২৮২ কোটি ১১ লাখ টাকা। ‘আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ মড়ককে চারলেনে উন্নীতকরণ (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক)’ প্রকল্পে ৪০৭ কোটি ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। আর ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা খরচে ‘শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ) সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়ায় আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদীবন্দর আধুনিকায়ন’ প্রকল্পে ১ হাজার ৩৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ হবে। অন্য প্রকল্পটি হলো ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা খরচে ‘মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্প। ১২৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা খরচে ‘বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ১১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা খরচে ‘হাওর অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ নামে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সভায় ২ হাজার ৯৩১ কোটি ৬২ লাখ খরচে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদীভাঙন হতে রক্ষা’ প্রকল্প এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৭২২ কোটি ২৪ লাখ টাকা খরচে ‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থানসমূহ নদীভাঙন হতে রক্ষা’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close