পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

ভারতে জামিয়ায় গুলি

রামভক্ত গোপালের বিরুদ্ধে খুনের মামলা

দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তান্ডব চালানো তরুণের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা করার অভিযোগ করেছে দিল্লি পুলিশ। একাদশ শ্রেণির ছাত্র ওই তরুণের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে যে, কিছুদিন আগেই ওই তরুণ একটি দেশি বন্দুক কেনে এবং বন্দুকটি হাতে পাওয়ার পর থেকেই সে নাগরিকত্ব আইনের

প্রতিবাদে যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে। এ ঘটনায় যাতে কোনোভাবেই অভিযুক্ত বাঁচতে না পারে, তার জন্য দিল্লি পুলিশকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে রোজকার মতোই স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ওই তরুণ। তার বাড়ি দিল্লি থেকে প্রায় ৬৮ কিলোমিটার দূরে জেওয়ারে। কিন্তু সে স্কুলে না গিয়ে দিল্লিগামী বাসে উঠে পড়ে। তারপরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ওই হামলা চালায়। ওইদিন দুপুরে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ সভা লক্ষ্য করে গুলি চালায় ওই তরুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী পড়ুয়াদের দিকে বন্দুক তাক করে বলে, এই নে আজাদি। এরপর সে গুলিও চালায়। তাকে থামাতে গেলে গুলিতে আহত হন জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শাদাম ফারুখ নামের এক পড়ুয়া, তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে জামিয়া মিলিয়ায় গুলি চালনায় অভিযুক্তকে সম্মানিত করবে হিন্দু মহাসভা। তাদের দাবি, নাথুরাম গডসের মতো একজন প্রকৃত দেশপ্রেমীর মতো কাজ করেছে অভিযুক্ত। হিন্দু মহাসভার মুখপাত্র অশোক পান্ডে বলেছেন, জামিয়ার ক্যাম্পাসে যারা দেশবিরোধী কাজ করতে যাচ্ছিলেন, তাদের চুপ করিয়ে দেওয়ার এবং ইনস্ট্যান্ট আজাদি দেওয়ার চেষ্টা করায় ছেলেটির জন্য তারা খুবই গর্বিত। বন্দুক চালানোকে বাহবা দিয়ে অশোক বলেছেন, সব দেশবিরোধীর শাস্তি দিতে হবে। তার কথায়, শার্জিল ইমাম ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, জে এন ইউ ও শাহিনবাদের যারাই দেশবিরোধী কাজ করবে, তাদের গুলি করেই মারা উচিত। জামিয়ায় গুলি চালানো ছেলেটিকে পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি তার আইনি খরচ বহন করার কথাও ঘোষণা করেছে হিন্দু মহাসভা।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ দাবি করেছেন, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী দেশভাগের পর বলেছিলেন যে, পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এ দেশে এলে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত। বাজেট অধিবেশনের শুরুতে সংসদে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণে উঠে এসেছে নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গ। রাষ্ট্রপতি সংসদে দাঁড়িয়ে সিএএর প্রশংসা করায় একদিকে সরকারপক্ষ যেমন হাততালিতে ভরিয়ে দেয়, তেমন বিরোধী আসন থেকে উঠে শেম শেম সেøাগান। তার ভাষণে প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যে হিংসারও সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেছেন, জাতির জনকের ইচ্ছাকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। সংসদের দুই কক্ষেই এই আইন পাস হয়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ অত্যন্ত খুশি। এদিকে, বাজেট অধিবেশনের শুরুতে প্রথামাফিক সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধীরা। পাল্টা টেবিল বাজিয়ে তাকে অভিবাদন জানিয়েছে সরকারপক্ষ। রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রতিবাদ জানিয়ে সংসদে পেছনের সারিতে গিয়ে বসেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট সোনিয়া গান্ধী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close