শাহ আলম, খুলনা

  ২৭ জানুয়ারি, ২০২০

খুলনায় নোট-গাইড কিনতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা!

খুলনায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি গাইডবই নির্ভর হয়ে পড়ছেন শিক্ষকরা। বিভিন্ন প্রকাশনার কর্মীরা শিক্ষকদের এই নোট ও গাইড বই সরবরাহ করে থাকেন। সঙ্গে থাকে বিভিন্ন উপঢৌকন। কোচিং সেন্টার ও শিক্ষকদের কারণেই গাইড কিনতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, খুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি কোচিং সেন্টারগুলোতে বছরের প্রথম থেকেই আনাগোনা বাড়ে গাইড বই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের। শিক্ষকদের জন্য উপহার হিসেবে থাকে নির্দিষ্ট বইয়ের সৌজন্য সংখ্যা ও উপহারসামগ্রী। যাতে আকৃষ্ট করে কোচিং ও শিক্ষকদের মাধ্যমে নোট-গাইড কিনতে বাধ্য করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এদিকে গত ২০ জানুয়ারি নির্দিষ্ট কারিকুলামের বাইরে অতিরিক্ত বই বা নোটবই পড়ানো বাধ্যতামূলক না করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত এক নোটিস জারি করা হয়। নোটিসে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি উল্লেখ করা হয় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট কারিকুলামের বাইরে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত বই বা নোটবই পড়তে বা কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা সরকারি বিধি পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

খুলনা জিলা স্কুলের অভিভাবক আবু জাফর বলেন, স্কুল কোচিং থেকেই নোট ও গাইড কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের বলা হয়। না কিনলে পড়া হয় না। এটা শিক্ষার্থীদের এক ধরনের মানসিক পীড়া। খুলনা কলেজিয়েটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কেসিসি উইমেন্স কলেজের অভিভাবক ফেরদৌসি নুর বলেন, শিক্ষকরা বই কেনার কথা বলার পর থেকে যত দিন না কেনে, ততদিন বলতেই থাকে। না কিনে দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাদের অভিভাবকদের এক ধরনের মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি খুলনা অঞ্চলের সভাপতি মমতাজ খাতুন বলেন, প্রকাশনার লোকজন বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের বিভিন্ন নোটবইয়ের সৌজন্য সংখ্যা দিয়ে যায়। তবে এগুলো শিক্ষার্থীদের কিনতে বলার জন্য কোনো ধরনের উপহার বা উপঢৌকন গ্রহণ করা ঠিক না। খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ে এ ধরনের নোট-গাইড বই নিয়ে কথা না বলার জন্য শিক্ষকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। তবে নোট-গাইড বইয়ের উৎপাদন বন্ধ না হওয়ার কারণে নোট-গাইডের প্রচলন কমে না।

খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কেসিসি উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর তৌহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষকরাই এখন গাইড বইয়ের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন। কেননা, পাঠ্যবইয়ের তুলনায় মডেল টেস্টের সুবিধা রয়েছে গাইডে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুনর রশীদ বলেন, নোট-গাইড বন্ধ করার জন্য পুলিশি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close