মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২০

আরো ৯ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি পাবে চট্টগ্রামবাসী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের হাতে নেওয়া চট্টগ্রাম ওয়াসার ১ হাজার ৮৯০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘শেখ রাসেল পানি শোধনাগারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ রোববার। চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে সামান্য দূরে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে দৈনিক ৯ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পটি চালু হবে। ফলে চট্টগ্রামের নগরবাসীর সুপেয় পানির চাহিদার ৮৩ শতাংশ মিটবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ঘন ঘন চট্টগ্রাম সফরে এসে এসব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতির খোঁজখবর নেন। চট্টগ্রামবাসীকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী অঙ্গীকার যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে কিনা, তা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চট্টগ্রামের সব প্রকল্প যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকেও তাগিদ দেন। গত ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রামে এসে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে তার মন্ত্রণালয়ের অধীন সব প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়নে কঠোর নির্দেশনা দেন। সর্বশেষ গত গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে এসে ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন চেম্বারের উদ্যোগে ‘স্মার্টসিটি : চট্টগ্রাম’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অঙ্গীকারগুলো সরকার বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর বলে ফের উল্লেখ করেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফজলুল্লাহ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নির্দেশনার প্রতি খেয়াল রেখে ছুটির দিনেও কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান গতি বজায় রাখলে আমরা ৪ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২’ দ্বিতীয় ধাপে আরো ১৪ কোটি লিটার পানি উৎপাদনের কাজও সমাপ্ত করতে যাচ্ছি দ্রুততার সঙ্গে। এ প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে চট্টগ্রাম মহানগরীর পানির চাহিদা দৈনিক ৫০ কোটি লিটার সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত হবে। এতে চট্টগ্রামের ৪২ কোটি লিটার পানির চাহিদা শতভাগ মিটিয়ে আরো ৮ কোটি লিটার নগরীর বাইরে গড়ে উঠা মিরসরাই শিল্পাঞ্চলসহ অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, এই উৎপাদন ক্ষমতা দিয়ে আগামী ২০৩৫ সাল নাগাদ চট্টগ্রাম মহানগরীর ২৪ ঘণ্টা পানির চাহিদা মিটবে। চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, শেখ রাসেল প্রকল্পে আমরা দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান প্রভৃতি উন্নত দেশের প্রযুক্তি অনুসরণ করেছি। আমরা হালদা নদী থেকে প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার পানি ইনটেক পাম্প স্টেশনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করি। কেমিক্যাল মেশানোর পর ছয়টি ধাপে পানি শোধন করা হয়। পানির মানমাত্রা সঠিক রাখার জন্য নমুনা পরীক্ষা করা হয় ল্যাবে। জীবাণু থাকলে সেগুলো ধ্বংস করা হয়। বিশুদ্ধকরণের পর ৯ কোটি লিটার পানি থাকে, সেগুলো পাইপলাইনে দেওয়া হয়। সেই পানি সরাসরি যাচ্ছে গ্রাহকদের কাছে। অপর প্রকল্প শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-দ্বিতীয় ধাপ সমাপ্ত হলে এ প্রকল্পটির আওতায় চট্টগ্রাম মহানগরীকে ৫৯টি মিটারিং এরিয়াতে বিভক্ত করা হবে। যার ফলে চট্টগ্রাম মহানগরীতে একটি আধুনিক পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য ও সাংবাদিক নেতা মহসীন কাজী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, গত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে চট্টগ্রামে পানি সরবরাহ করা হতো দিনে ১২ কোটি লিটার। ২০২০ সালে এসে বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার পানি সরবরাহ করছে ৩৬ কোটি লিটার অর্থাৎ যা বেড়েছে তিনগুণ। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরায় শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের কাজও সমাপ্তির পথে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন, পুরাতন লাইন সংস্কার করে চট্টগ্রাম মহানগরের উত্তর, মধ্য ও পূর্বাংশকে সুপেয় পানি সরবরাহের আওতায় আনা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close