মেহেরপুর প্রতিনিধি

  ২০ নভেম্বর, ২০১৯

মেহেরপুরে আবাদি জমিতে গড়ে উঠছে ইটভাটা

আইন অমান্য করে মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থানে আবাদি জমির মাঝখানে অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মিত হয়েছে। মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে আরো অনেক ইটভাটা গড়ে উঠছে আবাদি জমিতে। খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত মেহেরপুর জেলা ইটভাটার কারণে এবার পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী সংরক্ষিত বনাঞ্চল, আবাদি জমি ও জনবসতিপূর্ণ এলাকার তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু উপজেলা সদরে প্রবেশের পথে রাজাপুর, আমদহ, ময়ামারি, ঝাউবাড়িয়াতে আবাদি জমির মাঝখানে নির্মিত হচ্ছে ইটভাটা। পরিবেশ অধিদফতর থেকে কোনো ছাড়পত্রও নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। ইটভাটার আশপাশে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আবাদ। ইটভাটার ধোঁয়া গ্যাস ধুলাবালির কারণে এসব খেতের ফসল উৎপাদনে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

সরেজমিন মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠে আমঝুপি গ্রামের ময়ামারিতে দেখা যায়, আমঝুপি ইউপি সদস্য মিনারুল ইসলামের ইটভাটা। নতুন করে ভাটার আশপাশে আবাদি ৩০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ভাটা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমি লিজ বাবদ কৃষককে দিচ্ছেন বছরে ২০ হাজার টাকা। একই গ্রামের কৃষক শহিদুল হক জানান, ভাটার পাশেই তার জমি। ভাটার কারণে জমিতে ফসল উৎপাদন কমে গেছে। এজন্য তিনি বছরে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য ভাটা মালিককে জমি লিজ দিয়েছেন। আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত আবাদি জমির মালিকদের সঙ্গে কথা হয়। জমির মালিকরা অভিন্ন সুরে বলেন, ‘দেখতেই তো পাচ্ছেন কীভাবে আবাদি জমির মধ্যখানে ইটভাট হচ্ছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইটভাটার দক্ষিণ দিকের এক একর জমির মালিক আক্ষেপ করে বলেন, ‘শুনেছি, আবাদি জমির মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ করা বেআইনি কাজ। তা হলে এই ইটভাটা কীভাবে হচ্ছে?’

ইটভাটার মালিক মিনারুল ইসলাম বলেন, নিজ জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র ইট প্রস্তুতের জন্য আশপাশের জমি লিজ নেওয়া হয়েছে। আমি পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি নিয়ে এই ইটভাটা স্থাপন করেছি।

এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, আবাদি জমির মাঝখানে ইটভাটা করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদুল আলম বলেন, মেহেরপুর সদরে ৩৮টি ইটভাটা রয়েছে। অধিকাংশ ইটভাটার পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। তবে জেলাতে একটিও টিনের চিমনির ইটভাটা নেই। আবাদি জমিতে যেসব ইটভাটা আছে সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close