এস এম শাফায়েত, চুয়াডাঙ্গা

  ২০ নভেম্বর, ২০১৯

গ্রাম-বাংলায় নবান্ন উৎসব

‘নতুন ধানের চিড়া দিব-নতুন ধানের খই, নতুন ধানের ভাত রেধেছি পড়শিরা সব কই’ গ্রাম-বাংলার চিরচেনা এই বাক্যগুলো যেন ফুটে উঠেছিল কৃষকের মুখে মুখে। গাঁয়ের বধূদের ব্যস্ততা আর কৃষকের মুখের হাসিই বলে দিচ্ছে নবান্ন এসে গেছে। গোলা ভরা ধান হবে আর সেই ধানের চাল থেকে তৈরি করা হবে নানা রকম পিঠা। পিঠার গন্ধে ভরে উঠবে গ্রামের বাতাস। গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকেই চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন গাঁয়ের বধূরা সেজেছিল নান রঙের সাজে আর তৈরি করেছিল নানা রকমের পিঠা। উৎসবে মেতে উঠেছিল যুবক-যুবতি, কিশোর-কিশোরী, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ। আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠেছিল গ্রাম আর নানা রকম পিঠার গন্ধ সুবাস ছড়িয়ে ছিল বাতাসে। আনন্দে শামিল হতে ভুল করেনি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগর এমপি, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান, ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল আহসান, অধিনায়ক মেজর কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, সিভিল সার্জন এ এস এম মারুফ হাসান, তিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

নবান্ন উৎসব উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনয়নের নেহালপুর গ্রামের পান্তাপাড়া মাঠে দিনব্যাপি নানা উৎসবের আয়োজন করেন বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৭টায় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার ফিতে কেটে নবান্ন উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এর অল্প কিছুক্ষণ পর চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগর টগর এমপি নবান্ন উৎসব যোগ দিয়ে অনুষ্ঠানকে মুখরিত করে তোলেন। তাঁতে বোনা গামছা, রাখাল টুপি (মাতাল) আর নবান্ন উৎসব লেখা সাদা টি শার্ট উপহার দেয়ার মধ্য দিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের বরণ করা হয়। পরে আয়োজন স্থল পান্তাপাড়া মাঠ থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি গ্রামের মেঠোপথ ঘুরে একই স্থানে এসে সমাপ্তি হয়। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে গতকাল সবাই যেন সেজেছিল নতুন সাজে। বিভিন্ন বয়সি নারীদের গড়ে তোলা ১০টি পিঠার স্টল পরিবেশকে করে তুলেছিল আনন্দঘন। স্টলে ছিল নানা রকমের সুস্বাদু পিঠা। নবান্ন উৎসবে ছিল গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, ঝাপার খেলা। উৎসব অনুষ্ঠান পরির্দশন শেষে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হাজী আলী আজগর টগর এমপি উৎসবের আয়োজনকারীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরে পরবর্তী প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেয়া।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close