কলকাতা প্রতিনিধি

  ১৯ নভেম্বর, ২০১৯

তৃণমূলের নোটিসে শিবসেনার সই বেসুরো পাওয়ার

এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল হিন্দুত্ববাদী দল এবং ক’দিন আগেই বিজেপির সঙ্গী থাকা শিবসেনা। রাজসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের নোটিসে স্বাক্ষর করে সংসদে বিরোধী ইনিংস শুরু করেছে শিবসেনা। গত সোমবার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের সমস্যার কথা তুলে সংসদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শিবসেনা সংসদ সদস্যরা। অন্যদিকে, বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকে দেশের অর্থনীতির দুরাবস্থা, এয়ার ইন্ডিয়াসহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নীকরণ নিয়ে রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই নোটিসে শিবসেনার তরফে সমর্থন জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন শিবসেনার সঞ্জয় রাউত। শিবসেনার পাশাপাশি এই নোটিসে স্বাক্ষর করেছে এনসিপিও। স্বাক্ষর করেছেন সমাজবাদী পার্টি, সিপিএম, সিপিআই, আপ, ডিএমকে এবং আরজেডির সংসদ সদস্যরা। একই ইস্যুতে আলাদা নোটিস দিয়েছে কংগ্রেসও। সংসদের অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে এনডিএ বৈঠক বয়কট করেই চলতি অধিবেশনে নিজেদের অবস্থান কী হতে চলেছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছিল শিবসেনা। গতকাল সোমবার রাজ্যসভায় বিরোধী আসনে বসেছেন শিবসেনা সংসদ সদস্যরা। সূত্রের খবর, বিজনেস অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকেই বেহাল অর্থনীতি নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সুর মিলিয়ে চলতি সপ্তাহেই স্বল্প সময়ের আলোচনার দাবি জানিয়েছেন শিবসেনাসহ অন্যান্য বিরোধীরা।

এদিকে সোনিয়া গান্ধী ও এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের বৈঠকে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে এনসিপি ও কংগ্রেস সরকার গঠন করবে কি না তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। তার আগেই শিবসেনাকে সমর্থন দেওয়া নিয়ে কার্যত উল্টোকথা বলেছেন এনসিপি প্রধান। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে শারদ পাওয়ার বলেছেন, বিজেপি-শিবসেনা জোট করে ভোটে লড়েছিল। কংগ্রেস লড়েছিল এনসিপির সঙ্গে। এখন শিবসেনাকে তার পথ বেছে নিতে হবে। শিবসেনা ইতোমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সরকার গঠন করবে, এনসিপি যে তাদের সমর্থন করবে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে শিবসেনার নেতাদের মুখে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শারদ পাওয়ার বলেছেন, এরকম কিছু তিনি জানেন না। খবর, শিবসেনাকে সমর্থন দেওয়া নিয়ে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে শারদ পাওয়ারের বৈঠকে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ন্যূনতম শর্ত কী হবে তা ঠিক হবে। তবে কংগ্রেস সূত্রের খবর, শিবসেনাকে তার হিন্দুত্ব রাজনীতি ছাড়তে হবে, এমনটাই দাবি করবে এনসিপি। তবে সেসবের আগেই পাওয়ারের এই মন্তব্যে নতুন রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে রাজপালের ভূমিকার সমালোচনা করে এবার সংসদের ভেতরে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গতকাল সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় রাজপালের গতিবিধিতে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা নির্দিষ্ট করার জন্যে দাবি তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখর রায়। একই সঙ্গে এ প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি জানিয়েও অনুমতি মেলেনি বলেন অভিযোগ করেছেন তিনি। গতকাল শুরু হয়েছে চলতি লোকসভার প্রথম শীতকালীন অধিবেশন, একই সঙ্গে ভারতীয় সংসদের এটি ২৫০তম অধিবেশন। এই উপলক্ষে সংসদে সব রকম আলোচনার জন্য সরকার প্রস্তুত বলে বিরোধীদের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তবে, রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখর রায় বলেছেন, বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা চেয়ে আবেদন জানালেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। রাজপালের ভূমিকা নিয়ে আলোচনার জন্য আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু সুযোগ মেলেনি। এরপরই নাম না করে রাজপালের গতিবিধি নিয়ে সরব হয়েছেন সুখেন্দু শেখর রায়। বলেছেন, বেশ কয়েকটি রাজ্যে রাজপালকে, কেন্দ্রের এজেন্ট বলছে সাধারণ মানুষ। রাজপাল একটি একটি অরাজনৈতিক পদ। কিন্তু সেই পদকে কেউ কেউ রাজনীতি করার জন্য ব্যবহার করছেন। নিজের কর্মসূচি সম্পর্কে রাজ্য সরকারকে জানানোর প্রয়োজন মনে করছেন না অনেকে। কারো রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকলে তিনি রাজনীতিপাল হোন, তৃণমূলের কোনো আপত্তি নেই। রাজপালের গতিবিধির ওপর কী করে সাংবিধানিক বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সুখেন্দু শেখর রায়। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন রাজপাল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close