ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভর্তির মেধা তালিকায় স্থান পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন মেধাবী ছাত্র মোহাদ্দেস আলী। ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের মেধা তালিকার ৮৮৫তম অবস্থানে আছে মোহাদ্দেস আলীর নাম।

মোহাদ্দেস ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় তিলাই উচ্চবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.৯১ এবং ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৪.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তিনি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কামাত আঙ্গারীয়া গ্রামের দিনমজুর ওয়াহেদ আলীর ছেলে।

সংসারের ব্যয়ভার মিটিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়ালেখার খরচ বহন করার সামর্থ্য নেই ওয়াহেদ আলীর। প্রাথমিক অবস্থায় ভর্তির জন্য যে টাকা লাগবে সেটাই এখনো জোগাড় করতে পারেননি তিনি। মোহাদ্দেসের বাবা ওয়াহেদ আলী জানান, ‘বসতভিটা ছাড়া আমার আর কিছু নেই। আমার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় ছেলে ও মেয়েকে তেমন পড়াশোনা করাতে পারিনি। বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে একটি চামড়া কারখানার মজুর। আমাদের দুজনের আয়ে কোনো মতে সংসার চলে।

তিনি আরো বলেন, ‘মোহাদ্দেস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছে। আমার আরেক মেয়েও চলতি বছর এইচএসসি পাস করে একটি সরকারি কলেজে অনার্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি করাতে পারিনি। আরেক ছেলে আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। সব ছোট মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।

মোহাদ্দেস জানান, ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি বটে কিন্তু বাবার পক্ষে ভর্তির এতগুলো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। বাবা, ভাই, বোন ও শিক্ষকরা মিলে যে অর্থ দিয়েছিলেন, ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ ও ঢাকায় যাতায়াত করতে তা ফুরিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, ঢাবিতে চান্স পেয়ে যতটা খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু ভর্তির টাকার জন্য তার চেয়ে বেশি চিন্তায় রয়েছি। ঢাবিতে লেখাপড়ার স্বপ্ন মনে হয় আর পূরণ হবে না।

ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক আফসার উদ্দিন বলেন, ‘মোহাদ্দেস অসম্ভব মেধাবী। আমরা যতটুকু পেরেছি তাকে সহযোগিতা করেছি। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে সে হয়তো এ প্লাস পায়নি, তবে সে তার মেধার প্রমাণ দিয়েছে। মোহাদ্দেস একটা রতœ। সমাজের বিত্তবান মহৎ ব্যক্তি, সরকারি বা বেসরকারি দাতাসংস্থা পাশে দাঁড়ালে মোহাদ্দেসের স্বপ্নপূরণ হতে পারে।’ তাকে সাহায্য করতে চাইলে ০১৭৮০-৬৩৩৩৭৪ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।

"