খালেকুজ্জামান পান্নু, পাবনা

  ০৯ নভেম্বর, ২০১৯

পাবিপ্রবিতে উন্নয়নকাজের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বিতর্কিত’

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) প্রকল্পের কাজ পেয়েছেন বহুল আলোচিত চুয়াডাঙ্গার ‘রডের বদলে বাঁশ দেওয়া’ আলোচিত সেই প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড (ইসিএল)। অভিযোগ উঠেছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিতর্কিত এ প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিয়েছেন ভিসি। এমন ঘটনার মধ্যদিয়ে ক্রমান্নয়ে বেড়িয়ে আসছে পাবিপ্রবির উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র। তবে এ ব্যাপারে তার মতামত নেওয়ার জন্য উপাচার্যের কাছে ফোন করে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পাবিপ্রবির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম গোলজার হোসেন ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রকল্পে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কনস্ট্রাকশন কাজ হবে। সেখানে ড্রয়িং, ডিজাইন এবং সেন্টার ডকুমেন্ট তৈরিসহ বিভিন্ন কাজ করবে পরামর্শক হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক এবং নির্বাহী প্রকৌশলী বিস্তারিত বলতে পারবেন বলেও তিনি জানান।

উন্নয়ন কাজের কার্যাদেশ পাওয়ার জন্যে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান শ্যামলীর একুমেন্ট আর্কিটেক্ট প্ল্যানারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রায়হান রুবেল অভিযোগে বলেন, পাবিপ্রবির ডিপিপি পাস হওয়ার পর থেকে উপাচার্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরে ঘুরে খোঁজ নিয়ে বিতর্কিত ইসিএলকেই কাজ দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গায় এত সমালোচিত ওই প্রতিষ্ঠানকে কেন পাবিপ্রবিতে কাজ দিলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে চুয়াডাঙ্গার দর্শনাতে কৃষি বিভাগের প্রায় আড়াই কোটি টাকার একটি বিল্ডিং নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ইসিএলকে কাজ দেওয়ার ব্যাপারে পাবিপ্রবির প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) জি এম আজিজুর রহমান বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেডকে কাজ তো আর আমরা দেইনি। পিপিএ-২০০৬ এবং পিপিআর-২০০৮ এর নিয়মানুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই শেষে তারা কার্যাদেশ পেয়েছে। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রডের বদলে বাঁশ দেওয়ার ঘটনাটি নিয়ে আবেদন করা আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও অভিযোগ করেছে। যদিও চুয়াডাঙ্গার ওই কাজটি তো আর ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম করেননি তারা শুধু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ছিল। সেখানে তাদের কোনো দোষ নেই। তারপরও উপাচার্য স্যার অনেক যাচাই-বাছাই করে তাদের সব কাগজপত্র দেখেই মূলত ইসিএলকে কাজ দেওয়া হয়েছে। ইসিএল বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে গত ২৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগে দুজন শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে এক চাকরি প্রার্থী উপাচার্যের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে একটি অডিও বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ১২ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে নামেন। এছাড়াও সম্প্রতি ২৮ জোড়া বেঞ্চ ক্রয়ে সাড়ে ৬ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় দেখানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। যার বিল ভাউচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে। উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close