এইচ আর তুহিন, যশোর

  ০৯ নভেম্বর, ২০১৯

আঙুল নেই তবু অদম্য জাহিদুল

হাতের আঙুল না থাকলেও আছে প্রবল মনোবল। এই অদম্য স্পৃহাই তার প্রাণশক্তি। আঙুল ছাড়াই জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সে। কেবল লেখাপড়া নয়, তার শারীরিক এ অবস্থা নিয়ে ক্রিকেট খেলায়ও বেশ পারদর্শী। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে চায় সে। কাজ করতে চায় পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য। তার এ অবস্থা জন্মগত নয়। ছোট্ট বয়সে বিদ্যুতায়িত হয়ে তার এই অবস্থা হয়েছে। সে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের শ্রমিক মাহবুবুর রহমান ও গৃহিণী রাশিদা বেগমের ছেলে জাহিদুল ইসলাম। উপজেলার ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে চলমান জেএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে জাহিদুল। ক্লাসে তার রোল নম্বর ৬। তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল এবং সহকারী গ্রন্থগারিক আবদুল মজিদ জানান, জাহিদুল স্কুলের একজন নিয়মিত ছাত্র। লেখাপড়ায়ও যথেষ্ট ভালো। কেবল মাত্র নেই তার হাতের আঙল। খেলাধুলা, সাইকেল চালানোসহ সবই পারে সে অন্যদের মতো। তবে বেশি পারদর্শী পাশাপাশি ক্রিকেট খেলায়। মনিরামপুর সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ১০৫ নম্বর কক্ষে সহাপাঠীদের সঙ্গে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে সে।

জাহিদুল জানায়, এরই মধ্যে যে কয়টি পরীক্ষা দিয়েছে তাতে ভালো রিজাল্টের করার আশা করছে সে। দিনমজুর পরিবারের সন্তান জাহিদুলকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তার মা-বাবা। জাহিদুলের ভবিষ্যৎ কি হবে? কীভাবে তার জীবন চলবে? এসব ভাবনা মা-বাবার মাথায়। মা-বাবার ইচ্ছা তাকে লেখাপড়া শেখানো। এ জন্য অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে তাদের।

ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে চার ছেলেমেয়েসহ সাতজনের পরিবার চলে কোনো রকমে। যে কারণে জাহিদুলের পেছনে অর্থ ব্যয় করার মতো সামর্থ্য নেই তাদের। বছর তিনেক আগে জাহিদুল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান লিখে উপজেলা পরিষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজেই গান গেয়ে সবার নজরে চলে আসে।

লাউড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়াকালে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে তার দুটি হাতের কবজি পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। ওই বিদ্যালয় থেকে সে প্রাথমিক সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৪.৭৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। তার বাবা মাহাবুবুর রহমান জানান, সমাজের লোকজন তাকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করলে লেখাপড়া শিখতে পারবে জাহিদুল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close