নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৯

ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩ জঙ্গি ঢাকায় এসে ধরা

রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে নব্য জেএমবির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মো. আবদুল্লাহ (২৪), সফিকুল ইসলাম ওরফে মোল্লাজি (৩৮) ও মোস্তফা হোসেন আরিফ (২৫)। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা ভারতের উগ্রবাদীদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। দেশে ফিরে তারা জঙ্গিবাদের কার্যক্রম শুরু করেছিলেন।

ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, উত্তরবঙ্গের একটি জেলা থেকে বাসযোগে নব্য জেএমবির কয়েকজন সদস্য সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করার জন্য ঢাকায় আসছেন, এমন গোয়েন্দা তথ্য ছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার তিনজনকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে জানান, তারা প্রত্যেকেই পুরোনো জেএমবির সদস্য। পরবর্তী সময়ে গুলশানে হলি আর্টিজান মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি সোহেল মাহফুজের মাধ্যমে তারা নব্য জেএমবির দীক্ষা লাভ করেন। তাদের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপ ও প্রটেকটিভ অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যমে নব্য জেএমবি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিল।

গ্রেফতার এই জঙ্গিরা ২০১৭ সালের শেষের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর হাসপাতালের পাশে মহানন্দা নদীর পাড়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন নব্য জেএমবির এক সভায় মহসিন ও বদরুলের মাধ্যমে সদস্য পদ গ্রহণ করে বলে জানান। তারা ওই সভায় উপস্থিত সংগঠনের আরো কয়েকজনের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করেছেন। গ্রেফতার সফিকুল ইসলাম ওরফে মোল্লাজি এবং মোস্তফা হোসেন আরিফ নব্য জেএমবির অন্য সদস্য শাহিন আলম ওরফে আলামিন, জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন, আরিফ, কবির, জহিরুল ওরফে মামুনুর রশিদ ও হারুনসহ বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে নিয়ে যান।

জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন ২০১২ সালে বান্দরবানে জেএমবির অন্তর্কোন্দলে নিহত সালমান ওরফে তারেক হত্যা মামলার আসামি এবং জহিরুল ওরফে মামুনুর রশিদ ২০১৫ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে কলেজ শিক্ষিকা কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। ভারতে গিয়ে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ঝাড়খন্ড, কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যে ভারতীয় জঙ্গিদের সঙ্গে যৌথভাবে বোমা তৈরি ও অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের জুন মাসে তাদের সংগঠনের সদস্য মামুন, জিয়াউর রহমান ওরফে বাদল ওরফে মহসিন ও আল আমিন ওরফে শাহিন ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে তারা সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সন্ত্রসীরা দেশে ফিরে এসে গ্রেফতার মো. আবদুল্লাহর মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেন।

সাংগঠনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই জঙ্গিরা তাদের উল্লিখিত পলাতক আসামিদেরসহ ও অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিদের নিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সশস্ত্র পথে বর্তমান সরকারকে উৎখাত, দেশে তথাকথিত ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠা, সদস্য সংগ্রহ ও বৃদ্ধি, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ ইত্যাদির লক্ষ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ঢাকায় এসেছে বলেও জানান। তারা বর্তমানে বাংলাদেশে নব্য জেএমবির সদস্য হয়ে সংগঠনের সব সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন, নব্য জেমমবির সদস্যদের একত্রিত করে বাংলাদেশে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করছিল। গ্রেফতার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close