নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৯

দলীয় কাউন্সিল

ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের ভাবনা বিএনপির

দলীয় কোন্দল ভেঙে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সৎ ও ত্যাগী নেতা নির্বাচিত করতে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে নির্বাচন হচ্ছে না চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে। দলের নেতাদের দাবি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সরাসরি ভোটের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠলে দলের ভেতর যেমন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি তৈরি হবে, তেমনি যেকোনো আন্দোলনে সফল হওয়া সহজ হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে সরকারবিরোধী নানা কর্মসূচি দিয়েও প্রতিপক্ষের কৌশলের কাছে বারবারই পিছু হটতে হয়েছে। দলীয় ফোরামে এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হলেও ব্যর্থতার মূল কারণ উঠে আসে নেতৃত্বের বিষয়টি। তাই এবার ঘর গোছাতে কার্যকরী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে মাঠের এই বিরোধী দল।

বিতর্কের ঊর্ধ্বে ওঠে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব গড়ে তুলতে কাউন্সিলের মাধ্যমে সরাসরি ভোটে নেতা নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। গঠনতান্ত্রিক এ প্রক্রিয়া দলীয় কোন্দল কমিয়ে ত্যাগী নেতা নির্বাচনে সহায়তা করবে বলে মনে করেন দলের শীর্ষ নেতারা। চেয়ারপারসনও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জানানো হয়, বেগম জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের দেশের বাইরে থাকার বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে এখনই তা নিয়ে ভাবছে না বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর মাহমুদ চৌধুরী খসরু বলেন, যে নিপীড়ন নির্যাতনের পরিবেশ গত ১০ বছর ধরে দেশে চলছে, এ পরিবেশে তো যেকোনো ধরনের রাজনীতি করাই বেশ কঠিন। যাদের জন্য কাজ করছি, তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে, তাদের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। যত কষ্টই হোক সেটা আমরা করব।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সবাই অংশগ্রহণ করতে পারেন, মতামত দিতে পারেন, সে মতামতের ভিত্তিতে যখন সংগঠনের নেতৃত্ব বাছাই করা হয়, সেই নেতৃত্ব শুধু সঠিকই হয় না, রাজপথে যেকোনো কিছু মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে এরা যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া; পরবর্তী দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান। এই দুটি ব্যক্তিকে অনুপস্থিত রেখে আমরা কাউন্সিল করব, সেই কাউন্সিলটা কর্মীরা, সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করবে, সেটা নিয়েও ভাববার বিষয় আছে।

এ প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, এতে করে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় বলেন, বিভেদ থাকে, দ্বন্দ্ব থাকে, দলীয় দ্বন্দ্ব থাকে, এগুলো ভেঙে যায়, এটা শুধু আমাদের জন্য উদাহরণ নয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর জন্য উদাহরণ।

সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, অসুদপায়ে যাতে কেউ আসতে না পারেন, সেটাকে রোধ করার জন্য আমি মনে করি এটা একটা ভালো উদ্যোগ। যদি তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি হয়, সে কমিটি সব সময় সঠিক হবে এবং ভবিষ্যতে আমাদের আন্দোলন সংগ্রামে সেটা কাজে লাগবে।

সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনকে সাধুবাদ জানিয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, ত্যাগী নেতৃত্ব উঠে আসার পাশাপাশি তৃণমূলের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কমিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে তৃণমূলের ভোটকে গুরত্ব দেওয়া হয়, যা দলীয় ফোরামে প্রশংসা পায় এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে অন্য সংগঠনগুলোর ক্ষেত্রেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close