মুহাজিরুল ইসলাম রাহাত, সিলেট

  ১৩ অক্টোবর, ২০১৯

সিলেট মহানগর আ.লীগের নেতৃত্বে আসছে রদবদল

কেন্দ্রের নির্দেশনার পর রদবদল ঘটতে যাচ্ছে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। আগামী ৩০ নভেম্বর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা। সম্মেলনে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে আসছে নতুন কমিটি। পরিবর্তন আসছে কমিটির দুটি শীর্ষ পদেও।

সম্মেলন সফল করতে নড়েচড়ে বসেছেন নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা। শুরু হয়েছে তোড়জোড়। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য ও চাঙা ভাব। সিলেট নগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলোচনা। নেতৃত্বপ্রত্যাশীরাও বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন, সক্রিয় হচ্ছেন দলীয় কর্মসূচিতে। সমর্থন পেতে তৃণমূলে বাড়িয়েছেন যোগাযোগ। ধরনা দিচ্ছেন দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডে। মহানগরের ওয়ার্ডগুলোতেও সম্মেলনের তোড়জোড় চলছে।

এদিকে আগামী সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আর থাকছেন না দলের দায়িত্বে রাজনৈতিক মহলে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর আওয়ামী লীগের দুই নেতা বদর উদ্দিন কামরান এবং আসাদ উদ্দিন কেন্দ্রে ভালো পদ পেতে পারেন। এক্ষেত্রে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আর আসাদ উদ্দিন সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে যাচ্ছেন।

অপরদিকে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের কপাল পুড়তে পারেÑ এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে সিলেটের রাজনৈতিক মহলে। জানা গেছে, সঠিক নেতৃত্বের অভাবে বিগত সিটি নির্বাচন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে আওয়ামী লীগে ভরাডুবি হয়। দলে কোন্দল, মত বিরোধ দেখা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্বাচনী এলাকা বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক। বিগত ১৭ বছর ধরে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। আর গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি ১৬ বছর ধরে। অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর অবস্থাও একই। স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রতি। দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ গত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে তাকে শোকজ করা হয়।

জানা গেছে, দলে যেসব নেতাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে তারাই এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হবেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় টিম পদপ্রত্যাশীদের খোঁজখবর রাখছেন। মাঠ পর্যায়ে তাদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ে গোয়েন্দা রিপোর্টও সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে কাদের হাতে তুলে দেয়া হবে সিলেট নগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব।

মহানগরে সভাপতি পদে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রাজ উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ফয়জুল আনোয়ার আলাওর এছাড়া নগর আ.লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের নামও আলোচনায় রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক পদে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিজিত চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এ টি এম হাসান জেবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপদফতর সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের নাম আলোচনায় রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের অনুসারীরা কৌশলী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ফেসবুকে তৎপরতার পাশাপাশি তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সর্মথন আদায়ে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে সভাপতি ও আসাদ উদ্দিন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। পরদিন ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। এ কমিটির মেয়াদ ছিল ৩ বছর, ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ২০১১ সালের কমিটি দিয়ে এখনো সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে সিলেট আওয়ামী লীগ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close