আসাফুর রহমান কাজল, খুলনা

  ২৬ আগস্ট, ২০১৯

লবণসহিষ্ণু পাট চাষে সাফল্য

লবণসহিষ্ণু পাট চাষে শতভাগ সফল হয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চাষি ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা। এ ধরনের পাট চাষ দেখে কৃষকদের মাঝে বাড়ছে আগ্রহ। রোগবালাই কম আর ফলন দেখে খুশি স্থানীয় কৃষকরা। লবণাক্ত জমিতে বিজেআরআই-৮ জাতের পাট প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিস।

জানা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চলে আবাদি-অনাবাদি জমিতে লবণাক্ততার মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঞ্চলের লবণাক্ত জেলাগুলো হলো সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট এবং পিরোজপুর। সেখানে লবণাক্ততার কারণে অনেক জমি অনাবাদি থাকছে। বাড়ছে পতিত জমি পরিমাণ।

উপকূলীয় লবণাক্ত পতিত জমি পাট চাষের আওতায় আনার জন্য ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের পাখিমারা গবেষণা কেন্দ্র দেশি পাটের লবণসহিষ্ণু চারটি জাতের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। তারই অংশ হিসেবে পতিত জমিতে বিজেআরআই-৮ জাতের পাট চাষে করে শতভাগ সফলতা পাওয়া যায়। আর এ বছর খুলনা জেলার ডুমুরিয়াতে শুরু হয়েছে এ জাতের পাটের চাষাবাদ। এর মাধ্যমে কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে নতুন সম্ভাবনা। ফলে সোনালি আঁশ পাট ফিরে পেতে পারে তার হারানো গৌরব। আর কৃষক হবে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। তবে দীর্ঘদিন পাটের আবাদ কম হওয়ায় এবং স্থানীয়ভাবে পাটের দর কম থাকায় উৎপাদিত পাট বিক্রয় নিয়ে কৃষকরা নানা সমস্যায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।

ডুমুরিয়া উপজেলার মালতিয়ার গ্রামে কৃষক আসাদ মোড়ল জানান, বর্ষাকালে আমন চাষের জমি পতিত থাকে। শুকনো মৌসুমে জমিতে লবণের মাত্রা বেড়ে যায়। সেখানে অন্য ফসল চাষাবাদ তেমন হয় না। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় পাট চাষ করে বেশ ভালো ফলন পাওয়া গেছে। আটলিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. কামরুল ইসলাম জানান, ফলন ভালো হয়েছে। গাছ আগের থেকে অনেক মোটা। গায়ের আঁশও অনেক বেশি। অন্য জাতের থেকে এ জাতের পাটে রোগবালাই নেই বললেই চলে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, কৃষকের সব ধরনের ফসল ফলাতে ডুমুরিয়া কৃষি অফিস যথাযথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি নির্ভরশীল আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মানুষ। কমছে কৃষি জমি। আমাদের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে কৃষির ওপর। সে কারণে গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলের ৮০ জন কৃষককে বিজেআরআই-৮ জাতের পাট বীজ এবং নিবিড় পরামর্শ দিয়ে ভালো ফলন হয়েছে। ডুমুরিয়ায় এই প্রথম এ জাতের পাট চাষ করা হয়েছে। আগে বিঘাপ্রতি ১২/১৪ মণ পাট পেত কৃষকরা এখন পাবে ১৬/১৮ মণ পাট।

গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আলমগীর বিশ্বাস জানান, এ অঞ্চলের কৃষি উত্তরবঙ্গ থেকে অনেকখানি পিছিয়ে। এ অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার লবণাক্ত জমিতে পাট চাষের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close