নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২২ জুলাই, ২০১৯

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

নদী দখল ও দূষণমুক্ত করতে দুই মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ এবং দখল রোধে খসড়া মহাপরিকল্পনা (মাস্টারপ্ল্যান) চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নদীগুলো দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে এবং নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনা হবে।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ ও দখল রোধ এবং নাব্য বৃদ্ধির জন্য গৃহীত মাস্টারপ্ল্যান অবহিতকরণ সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্য বৃদ্ধির জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি সংক্রান্ত কমিটি মাস্টারপ্ল্যান দুটি চূড়ান্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ জুলাই মাস্টারপ্ল্যান দুটি অনুমোদন করেছেন।

তিনি বলেন, মাস্টারপ্ল্যানে নদী দূষণের ৯টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য যাতে নদীতে না যায় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, নদী দখলমুক্ত করার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দূষণ রোধ এবং নাব্য বৃদ্ধির জন্য করা মাস্টারপ্ল্যানে তিনটি বিষয় রয়েছে। নদী দূষণ, দখল এবং নাব্য। ঢাকার নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, তুরাগ, বালু ও পুংলি নদী। এসব নদীর সঙ্গে যুক্ত ৩৯টি খালকেও মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নদীগুলোর দূষণ, দখল এবং নাব্য বাড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর শাখা নদী, খালগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণসহ বাস্তবিক ধারণা নিয়ে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প পর্যালোচনা করে মাস্টারপ্ল্যান দুটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

নদী দূষণ, দখল রোধ এবং নাব্য বৃদ্ধিতে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে চার ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম (১ বছর), স্বল্পমেয়াদি (৩ বছর), মধ্যমেয়াদি (৫ বছর) এবং দীর্ঘমেয়াদি (১০ বছর)। মাস্টারপ্ল্যানে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব ও কার্যাবলি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর জন্য মাস্টারপ্ল্যানে ২৪টি মূল কার্যক্রম এবং এর আওতায় ১৮০টি সহযোগী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীর জন্য মাস্টারপ্ল্যানে ৪৫টি মূল কার্যক্রম এবং এর আওতায় ১৬৭টি সহযোগী কার্যক্রম চিহ্নিত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, পানিসম্পদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নদী বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গতকাল বিকালে কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর ও সব ওয়াসার প্রকল্পগুলোর সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রকল্প পরিচালকদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনার প্রকল্পের পরিচালক হচ্ছেন। সে প্রকল্প এগিয়ে নেওয়া আপনার দায়িত্ব। প্রকল্পটির কোথাও সমস্যা হলে তার সমাধান করে প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে চেষ্টা করবেন।

তিনি আরো বলেন, ভূ-উপরিভাগের পানি ব্যবহারে আপনাদের আরো সুদূরপ্রসারী চিন্তা করতে হবে। ২০৩০ সালের ভেতর সারা দেশের মানুষের মধ্যে সুপেয় পানি পৌঁছাতে হবে। সেজন্য আপনারা পানি ডিস্ট্রিবিউশান নেটওয়ার্কের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষরা সেই সুযোগ নিতে পারে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, শুকনা মৌসুমে আমাদের নদীগুলো শুকিয়ে যায়। নদীগুলোর প্রবাহ ফিরিয়ে আনা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড পানি ব্যবহার কমাতে হবে। বন্যা না হলে দেশ থাকবে না। পানির অভাব বড় অভাব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে মন্ত্রী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা ওয়াসার প্রকল্পগুলো এবং পৌরসভার কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে পর্যালোচনা করেন।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, আইএমইডির মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন সংস্থার পরিচালক ও কর্মকর্তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close