নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ জুলাই, ২০১৯

দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ

অবশেষে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এমডিকে বদলি

অনিয়ম-দুর্নীতি-চাঁদাবাজি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমানকে অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পেট্রোবাংলার গঠিত তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির প্রমাণ মিললেও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানিতে এমডি পদে বদলি করা হয়েছে।

গত বছর আগস্টে বড়পুকুরিয়া কয়লা কোম্পানিতে এমডি পদে ফজলুর রহমানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। কয়লা খনি কোম্পানির দায়িত্ব নিয়েই তিনি অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রফিট বোনাস আটকে রেখে ওপর মহলকে দেওয়ার নাম করে কয়লা খনি কোম্পানির স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবার কাছ থেকে মাথাপিছু ৪০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করেন। এভাবে প্রায় ৫৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এ নিয়ে পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির প্রমাণ পায়। এসব কারণে দেশের একমাত্র এই কয়লা খনির কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির সার্বিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার সঙ্গে কোম্পানির কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হলে প্রতিষ্ঠানটির অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন তার অপকর্মের বিষয়গুলো লিখিতভাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে জানায়। এছাড়া কোম্পানির মাসিক সমন্বয় সভাসহ বিভিন্ন ফরমাল ও ইনফরমাল সভায় ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এসব বিষয়ও প্রতিমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদনে তুলে ধরা হয়।

প্রতিমন্ত্রী ওই সব অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেন। কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে বদলি করে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির দায়িত্ব দিয়েছে। পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোস্তফা কামাল ১৬ জুলাই এ সংক্রান্ত অফিস আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। গতকাল বুধবার থেকে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে। বুধবার সকালে ফজলুর রহমান তার পুরোনো কর্মস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে বাধা দেয় এবং তাকে সেখানে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। ফলে তিনি সেখানে প্রবেশে ব্যর্থ হন।

সূত্র জানায়, ফজলুর রহমান এর আগেও মধ্যপাড়া গ্রানাইট কোম্পানিতে ছিলেন। তখন অনিয়মের অভিযোগে তাকে সেখান থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। কোম্পানিটির চরম নাজুক পরিস্থিতির জন্য তাকেই দায়ী করা হয়। এরপরও তাকে মধ্যপাড়ার দায়িত্ব দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। এদিকে ফজলুর রহমানকে সরানো হলেও তার অলিখিত দুই উপদেষ্টা জিএম প্রশাসন (চলতি দায়িত্ব) সাইফুল ইসলাম দিপু এবং ম্যানেজার (মাইনিং) মোশাররফ হোসেন সরকার স্বপদে বহাল রয়েছেন। অথচ অনিয়ম-দুর্নীতি থেকে শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিনা কারণে হয়রানি সব কিছুতেই তারা এমডিকে সহায়তা করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close