আশরাফুল আলম, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

  ২১ জুন, ২০১৯

সোনারগাঁয়ে হেলে পড়া ভবনে ঝুঁকিতে বসবাস

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে একটি বহুতল ভবন পাশের অন্য একটি ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। হেলে যাওয়া ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করছে বেশ কয়েকটি পরিবার। এ ছাড়া সেই ভবনে চলছে আঞ্জুমান নামের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পাঠদান। ভবনটিতে বসবাসরত ভাড়াটিয়ারা বলেন, মালিকপক্ষের খামখেয়ালিতে ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে থাকতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের শঙ্কা দ্রুত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বহু প্রাণহানির ঘটনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনের যাতায়াতের প্রধান সড়কের পাশে বাড়ি মজলিশ এলাকার হাবিবপুর ঈদগাহসংলগ্ন এলাকায় পাশাপাশি দুটি ভবনের মধ্যে একটি বহুতল (৫ তলা) ভবনের পাশে থাকা অন্য একটি বহুতল (৪ তলা) ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানির ঘটনা। ভবনটি হেলে পড়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন উভয় ভবনে বসবাসরত ভাড়াটিয়াসহ স্থানীয় বাড়ি মজলিশ এলাকার লোকজন। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, হেলে পড়া ভবনটি তৈরির সময় কোনো কোড (নিয়ম) মানা হয়নি। ৩ তলার গাঁথুনি দিয়ে প্রথমে তিন তলা করলেও অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়ার লোভে পরবর্তীতে আরো দুই তলা বাড়িয়ে ৫ তলা ভবন করা হয়েছে। ভবনের নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত ভাড়ায় চলছে খালেক আঞ্জুমান নামের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল। যেখানে শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর নিয়মিত পাঠদান চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কয়েকদিন আগে হঠাৎ দেখা যায় ৫ তলা ভবনটি পাশের ৪ তলা ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। বিষয়টি বাড়ির মালিক নিজে দেখেও না দেখার ভান করে ও এলাকাবাসীর কথার কোনো কর্ণপাত না করে এড়িয়ে চলছেন। যেভাবে ভবনটি হেলে পড়েছে তাতে ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেকোনো সময় পাশের ভবনটিও হেলে পার্শ্ববর্তী মানুষের বসতবাড়ির ওপর পরে যাওযার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে ওই ভবনের পাশের মানুষ যেমন আতঙ্কে রয়েছে; তেমনি হেলে যাওয়া ভবনে বসবাসরত মানুষজন ও কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরাও জীবনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। তবে ভবন মালিকের নিষেধ থাকায় সেই ভবনে বসবাসরত ও কিন্ডারগার্টেনের কোনো শিক্ষার্থী এমনকি তাদের অভিভাবকরাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

হেলে পড়া ভবনের মালিক ফিরোজ মিয়া দাম্ভিকতার সুরে বলেন, ভবন হেলে পড়লেও কিছু হবে না, এখনো এই ভবনে অনেক লোকজন বসবাস করছে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। মজবুত করেই ভবন তৈরি করা হয়েছে। তবে বিল্ডিং কোড মানা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিষয় জিজ্ঞাসার পর বলেন, প্রয়োজন হলে ওপরের বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলব, তা হলে আর সমস্যা হবে না। ফিরোজ মিয়ার হেলে পড়া ভবনের পাশের যেই ভবনের ওপর হেলে পড়েছে সেই ভবনের মালিক জজ মিয়া জানান, নির্মাণ ত্রুটির কারণে ও বিল্ডিং কোড না মেনে তিন তলার গাঁথুনি দিয়ে ৫ তলা করার কারণে মনে হয় ভবনটি হেলে পড়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী হায়দার জানান, আমরা ভবনটি পরিদর্শন করেছি। এটা সত্যিই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুতই নোটিস পাঠানো হবেÑ এটা ভেঙে ফেলার জন্য। তারপর গাফলতি করলে সেই মালিকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close