প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ জুন, ২০১৯

এনআরসি ইস্যু

আসামে বাড়ানো হচ্ছে বিদেশি রাখার বন্দিশালা

আসাম সরকার জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) তালিকা প্রকাশের আগেই দিল্লির কাছে আরো ১০টি বন্দিশালা গঠনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর বিদেশি ট্রাইব্যুনাল থেকে বহু ‘বিদেশি’ শনাক্ত হবে। আসাম সরকার ভাবছে, অনুপ্রবেশকারীদের জন্য এই বন্দিশালাগুলো প্রয়োজন হবে। এ বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিতর্কিত এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। এবার অন্তত ৯ লাখ আসামবাসীর গায়ে ‘বিদেশি’ তকমা লাগছে। তাই আসাম সরকার তাদের বন্দিশালায় ঢোকানোর বন্দোবস্ত করতে চাইছে।

আসাম রাজ্যে এর মধ্যে ছয়টি জেলখানায় রয়েছে ছয়টি বিদেশি বন্দিশালা বা ফরেনার্স ডিটেনশন ক্যাম্প। ছয়টি বন্দিশালায় আবাসিক রয়েছেন ৯৮৬ জন। এদের প্রায় সবাই ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য। গোয়ালপাড়ায় শুধু তিন হাজার ‘বিদেশি’ থাকার উপযুক্ত বিদেশি বন্দিশালা বানানো হচ্ছে। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি রুপি। কিন্তু এনআরসি তালিকা প্রকাশের আগে আসাম সরকার আরো বন্দিশালা চাইছে।

আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তরুণ গগৈয়ের অভিযোগ, পক্ষপাতদুষ্ট ও বিপথচালিত এনআরসি প্রক্রিয়ায় লাখ লাখ মানুষ তাদের নাগরিকত্ব হারাতে চলেছেন।

আসামের এনআরসি প্রক্রিয়ায় আবেদন করেন ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ জন। গত বছরের ৩০ জুলাই প্রকাশিত চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জন আবেদনকারীর নাম বাদ পড়ে। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর নাম সংযোজনের চূড়ান্ত সময়সীমা পর্যন্ত মাত্র ৩১ লাখ আবেদন জমা পড়েছে । অর্থাৎ ৯ লাখ মানুষ আবেদনই করেননি। এছাড়া লক্ষাধিক মানুষের এনআরসি তালিকাভুক্তি নিয়ে আপত্তি রয়েছে। অর্থাৎ ৩১ জুলাই এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় প্রায় ১০ লাখ আসামবাসী নাগরিকত্ব হারাতে চলেছেন। ভারতীয় দন্ডবিধিতে তারা অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারী হতে পারেন।

রাজ্যে বর্তমানে ৩৩টি জেলার জন্য ১০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। রাজ্য সরকার আরো ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনুমোদন দিয়েছেন। এর মধ্যে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই চালু হবে ২০০টি ট্রাইব্যুনাল। তিন মাস পরপর পর্যায়ক্রমে শেষ হবে অতিরিক্ত ১ হাজার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বানানোর প্রক্রিয়া।

২০১৪ সালে ভারতের সাধারণ নির্বাচনের আগে আসামে ভোট প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে সব বিদেশি বন্দিশালা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আমলেই ক্রমে বাড়ছে বিদেশিদের জন্য এই বিশেষ জেলখানা। এ ব্যাপারে মোদি এখন নীরব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close