নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার নিম্ন আদালতে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা
* প্রায়ই চুরি হচ্ছে * সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ
পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই পুরান ঢাকার নি¤œ আদালতে। এখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের আনাগোনা ঘটে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আদালত চত্বরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, স্ক্যানিং মেশিন বা তল্লাশি চৌকি না থাকায় অনেকাংশে ঝুঁকি রয়েছে। আদালত প্রাঙ্গণে যে কেউ সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে বিনা বাধায় ঢুকছে। যেকোনো সময় যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, আদালতের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা বলেন, নিরাপত্তায় ঘাটতি থাকায় আদালত চত্বর থেকে প্রায়ই আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী বা আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইলসহ টাকা-পয়সা চুরি হচ্ছে। সম্প্রতি এক আইনজীবীর মোটরবাইকও আদালত চত্বর থেকে চুরি হয়েছে। এসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় উদ্বিগ্ন সবাই। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণ অরক্ষিত থাকায় হকার ও ফেরিওয়ালাদের উৎপাতও রয়েছে।
আদালতে নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আদালত চত্বর থেকে এজলাস পর্যন্ত যে পরিমাণ সিকিউরিটি থাকা প্রয়োজন তা নেই। ফোর্সেরও যথেষ্ট সংকট রয়েছে। কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
আদালতের বাইরের দৃশ্য সরেজমিন নি¤œ আদালত চত্বর ঘুরে দেখা যায়, চত্বরের প্রবেশপথগুলোর নিরাপত্তা ঢিলেঢালা। কিছু প্রবেশপথে নিরাপত্তার বালাই নেই; নেই তল্লাশির ব্যবস্থা। আদালত ভবনগুলোর প্রবেশপথের অবস্থাও একই।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ মো. মামুন বলেন, আদালতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এই নিরাপত্তা আরো জোরদার করা উচিত। তিনি বলেন, মহানগর দায়রা জজ ভবনের ৫ ও ২ তলায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বাহিনী থাকলেও অন্য তলা বা ভবনে নেই। আদালত চত্বরের আশপাশেও আলাদা নিরাপত্তা নেই।
ঢাকা মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, নি¤œ আদালতে আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় প্রতিনিয়তই অনেক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে। আদালত চত্বরের প্রবেশপথ ও আদালতের ভবনগুলোর প্রবেশপথে নেই তল্লাশি চৌকি বা স্ক্যানিং মেশিন। তিনি বলেন, আদালত চত্বরে রয়েছে অবাঞ্ছিত লোকজনের আনাগোনা। ইদানীং লক্ষ করা যাচ্ছে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় আদালত চত্বরে চুরির ঘটনাও ঘটছে।
আদালত এই আইনজীবী বলেন, এর কারণটা হলো কাউকে জবাবদিহি করতে হয় না। প্রশাসন তৎপর না থাকায় দিন দিন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে হাজার হাজার মানুষ।
আবদুল্লাহ আবু মনে করেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য পুলিশ-প্রশাসনের তৎপর হতে হবে।
ঢাকা বারের সভাপতি গাজী শাহ আলম বলেন, প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আসে এখানে। নিরাপত্তা যা আছে তা পর্যাপ্ত নয়। নিরাপত্তা আরো জোরদার করা উচিত। এখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বা স্ক্যানিং করা হচ্ছে না। অন্তত গুরুত্বপূর্ণ আদালতগুলোর প্রবেশমুখে স্ক্যানিং মেশিন বা তল্লাশি থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
কোতোয়ালি থানার ওসি এ বি এম মশিউর রহমান বলেন, এখানে আমরা কর্তৃপক্ষ থেকে যত ফোর্স পাই, সব ফোর্স মোতায়েন করি। এখানে প্রতিটা আদালতের গুরুত্ব বিবেচনায় ফোর্স দেওয়া হয়। গেটে মোতায়েন করা হয়।
তিনি বলেন, এখানে লক্ষাধিক লোক আসে। সে তুলনায় নিরাপত্তার ফোর্স অপ্রতুল থাকলেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
"