নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ জুন, ২০১৯

জুবায়েরপন্থির দেওয়া আগুনে সাদপন্থির মৃত্যু

তাবলিগ জামাতের সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থির দ্বন্দ্বের জেরে জুবায়েরপন্থি সমর্থকের দেওয়া আগুনে দগ্ধ আবদুর রহিম (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা গেছেন। গতকাল সোমবার দুপুর ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত আবদুর রহিমের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি এলাকায়। মৃত্যুর একদিন আগে রোববার কিশোরগঞ্জের একজন ম্যাজিস্ট্রেট বার্ন ইউনিটে উপস্থিত হয়ে আবদুর রহিমের জবানবন্দি নিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি কয়েকজনের নাম বলেছেন।

নিহতের বড় ভাই আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘গত ১৯ মে রাতে তারাবি নামাজের পর মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে পেছন থেকে জুবায়েরপন্থির লোকজন রহিমের গায়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করান।’ তিনি বলেন, ‘আগে সবাই সাদ অনুসারী ছিল। পরে জুবায়ের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধ হওয়ার পর থেকে জুবায়ের অনুসারীরা আমাদের সব কর্মকা-কে বাধা দিয়ে আসছে। আর এ কারণেই আজ তাকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।’ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থানার পূর্বপাড়ার মোস্তফার ছেলে আবদুর রহিম। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি এক সন্তানের জনক। আবদুর রহিম তার মামা মামুনুর রশিদের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শঙ্কর পাল জানান, তার শরীরের পেছনে ঘাড় থেকে কোমর পর্যন্ত দুই হাত ও মুখসহ ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

এ ঘটনায় নিহতের মামা মামুনুর রশিদ কটিয়াদি থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলো মাহমুদুল হাসান সুমন ও সোহেল। তবে ঘটনার সঙ্গে আরো চার থেকে পাঁচজন জড়িত। মৃত্যুর আগে আবদুর রহিম তাদের সবার নাম বলে গেছেন।

মামুনুর রশিদ বলেন, ‘গত ১৭ মে তাবলিগ জামাত নিয়ে মসজিদে যাওয়ার পর জুবায়েরপন্থিরা আমাদের বের করে দেয়। এই ঘটনার দুই দিন পর আমার ভাগ্নের গায়ে আগুন দেওয়া হয়। আমরা এর বিচার চাই।’ তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মসজিদে এভাবে আমাদের মারধর করা হচ্ছে। মসজিদ থেকে বের করে দিচ্ছে। তারা জঙ্গিগোষ্ঠী। আমরা আল্লাহর পথে আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জুবায়ের আহমদের কাছে জানতে চেয়ে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে কটিয়াদি থানায় ২০ মে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা কারাগারে রয়েছে। তবে মামলায় নাম থাকা অভিযুক্ত কলি এখনো পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) কটিয়াদি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুর দোহা বলেন, ‘১৭ মে কটিয়াদি উপজেলার একটি মসজিদে জামাত আসছিল। তাদের খেদমতের জন্য সাদপন্থি আবদুর রহিম গিয়েছিল। তখন জুবায়েরপন্থির সোহেল, সুমন ও কলি তাদের বের করে দেয়। এরই জের ধরে ১৯ মে আগুন দেওয়া হয়। আমরা সুমন ও সোহেলকে গ্রেফতার করেছি। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, ‘মূলত দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close