প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৬ মে, ২০১৯

গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতীয় কবিকে স্মরণ

জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। কবির সৃষ্টকর্ম নিয়ে আলোচনা, আবৃত্তি, গান ও নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে কবি বন্দনায় মুখর ছিল আজ সারা দেশ।

জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান নজরুল স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিকাল ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী এমপি ও জাতীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল।

এবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘নজরুল-চেতনায় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

এছাড়াও কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল¬ার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা, ঝিনাইদহে, কুষ্টিয়ায়, মৌলভীবাজারে এবং চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তার ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় জাতীয় কবির সমাধি।

গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে রাজধানীতে কবির জন্মবার্ষিকী পালনের সূচনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।

কবির সমাধিতে সকাল সোয়া ৭টায় পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জমানসহ শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, হল সংসদ, শিক্ষক সমিতিসহ ছাত্রছাত্রীরা কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পরে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে কবির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সমাধি প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাবি উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দি, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়াসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সংগীত জগৎকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্য কর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন।

আজ শনিবার (২৫ মে) ১১ জ্যৈষ্ঠ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে নজরুল জন্মে ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close