এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ২২ মে, ২০১৯

রাজশাহীতে দেদার বিক্রি হচ্ছে সেই ৫২ ভেজাল পণ্য

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত সেই ৫২টি ভেজাল পণ্য এখনো রাজশাহীর বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে। নিষিদ্ধ এসব পণ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না হওয়ার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে অভিমত ক্রেতা-বিক্রেতাদের। শুধু তাই নয়, মানহীন এসব পণ্য বিক্রিতে আদালতের নির্দেশনার কথা জানেন না বলেও দাবি করেছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত পণ্যগুলোর একাধিক মার্কেটিং আফিসার। অথচ গত ১৩ মে উচ্চ আদালতের এক আদেশে এসব মানহীন পণ্য বাতিল ঘোষণা করে ১০ দিনের মধ্যে বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়। আর এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দাবি সর্বস্তরে সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি হলে এসব বিষয়ে আইন প্রয়োগের তেমন প্রয়োজনই পড়বে না। আদালতের নির্দেশনা মেনে সবাই সুস্থ থাকবেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগরীর উপশহর, ডিঙ্গাডোবা, লক্ষ্মীপুরসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন অভিমত। নগরীর বেশিরভাগই বিক্রেতাদের দাবি আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে তাদের সরকারিভাবে বা বাতিলকৃত সেই ৫২টি মানহীন পণ্য কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। আর ক্রেতারা ক্রয় করছেন বলেই তারা সেসব পণ্য এখনো বিক্রি করছেন। তবে কিছু বিক্রেতা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আদালতের সেই নির্দেশনার বিষয়ে অবগত থাকার কথা স্বীকার করলেও তাদের কাছে কোনো নির্দেশনা না আসায় এখনো সেসব পণ্য বিক্রি করছেন। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলেন, আদালতের বাতিল ঘোষণা করা ৫২ পণ্যগুলোর বিষয়ে বেশিরভাগই মানুষ জানেন না।

নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী এনামুল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘টিভি বা পেপার পড়ার সময় পাই না। তবে ৫২টি পণ্য বাতিলের কথা শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি। যে কারণেই কাস্টমাররা চাইলে আমি তো বিক্রি করবই। তবে নির্দেশনা আসলে সেসব পণ্য বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেব।’

রাজশাহী মহানগরীর উপশহর এলাকার এক ক্রেতা রেজাউল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘ভেজাল পণ্যগুলো বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা দিলেও আদালতের আদেশ পালন করছেন না কোনো দোকানদাররা। ডিসপ্লেতে সেসব পণ্য দেখে বাচ্চারা আগের মতো নেওয়ার জন্য বাইনা ধরছে, না কিনে দিলে কান্না থামাচ্ছে না, এ মুহূর্তে আমরা অসহায়। যে কারণে ভেজাল পণ্যগুলো দোকান থেকে অপসারণের জন্য আইনপ্রয়োগকারী প্রশাসনের সব সংস্থাকে একযোগে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদের ও জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক অপূর্ব অধিকারী প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ‘প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু ভোক্তা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধের ঘাটতি থাকায় আদালতের নির্দেশনা তারা উপেক্ষা করে চলেছে। মানুষের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি হলে এ বিষয়ে অন্তত অভিযানের প্রয়োজন পড়ত না। অথচ এসব ভেজাল পণ্য খেয়েই বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আদালতের নির্দেশনা তারা মানছেন না। যে কারণে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আইনপ্রয়োগ করে সহসায় এসব সমস্যা দূর করা সম্ভব হয়ে উঠবে না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close