নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ মে, ২০১৯

খাল দখলের মচ্ছব তুরাগে

রাজধানীর তুরাগ ও উত্তরার পয়ঃনিষ্কাশনের একমাত্র খিদির খালটি দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত পাল্লা দিয়ে চলছে দখল। দখল নিয়ে হামলা, মামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে।

সরেজমিন রাজধানীর তুরাগের ১০নং সেক্টর সøুইসগেট থেকে ১২নং সেক্টর খালপাড় পর্যন্ত এই খালটির দুই পাশে পাল্লা দিয়ে চলছে দখল। বিশেষ করে ১২নং সেক্টর ১৯নং সড়ক এবং তুরাগের টেকপাড়া ব্রিজ এলাকাটি দখলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে গত ২৫ এপ্রিল একটি দৈনিকে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। পরে এখানে উচ্ছেদ অভিযান চালান ৫১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শরিফুল রহমান। উচ্ছেদের পর পুনরায় দখলে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। নতুন করে খাল দখলে বাধা দেওয়ায় মারুফ নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে মারধর করা হয়।

সংশ্লিষ্ট এলাকাটি নবগঠিত দুই ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী হওয়ায় উভয় পক্ষের উচ্ছেদ না চলার কারণে নিজ নিজ প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্থানীয় অসাধু চক্র। খালের পাড়ে দোকান বসিয়ে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। ৫৩নং ওয়ার্ডে খিদির খালের ওপর কাঠের মাচা করে মিজান নামে এক ব্যক্তি তৈরি করেছে বিশাল ক্যারমবোর্ড খেলার ঘর, পাশেই রয়েছে খালের ওপর কাঠের মাচাকরা রিকশা গ্যারেজ, রিকশাচালকদের জন্য খালের ওপর ঝুলন্ত টয়লেটও তৈরি করেছেন তিনি। একটু সামনে গেলে নান্নু মিয়ার টিনের ঘর। তার পূর্বে রূপমিয়ার বোর্ডঘর, পাশেই সুলেমানের ক্যারমবোর্ডের ঘরসহ কয়েকটি দোকান। এর পূর্বে রূপমিয়ার ছোট ভাই জজ মিয়ার ভাড়া দেওয়া শরবতের দোকান, রয়েছে রুপ মিয়ার ভাড়া দেওয়া চায়ের দোকান, তার পাশে রয়েছে ইকবালের কম্পিউটারের দোকান, জামাই বাবুলের হোটেল ও উজ্জ্বলের ভাঙারি দোকান। ব্রিজের পূর্ব পাশে ক্যারমবোর্ডের দোকান, চা দোকানসহ একাধিক দোকান বসানো হয়েছে খালের ওপর।

অন্যদিকে ব্রিজের ওপরে কয়েকটি চা দোকানসহ রয়েছে আলালের মুরগির দোকান। এদের অধিকাংশই স্থানীয় প্রভাবশালী। খালের ওপরে মাচা করে শতাধিক দোকান হোটেলসহ রাস্তা ও ব্রিজের ওপরে দোকান বসায় একদিকে যেমন স্বাভাবিক জনচলাচল ব্যাহত হচ্ছে; অন্যদিকে দখলে-দূষণে বিলীন হতে চলেছে খিদির খালটি। অতি শিগগিরই এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে তুরাগবাসীকে এর চরম মূল্য দিতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই তুরাগ পরিণত হয় জল মহালে। যথাযথ স্যুয়ারেজ লাইন না থাকায় টেকপাড়ার এই সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত গড়িয়ে আসে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও বাথরুমের নোংড়া পানি। ফলে এখানকার বাসিন্দাদের ওপর প্রভাব পড়ছে নানাবিধ রোগের।

এ বিষয়ে ৫৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আমি আজকে এলাকাটি পরিদর্শনে যাব এবং দখলের বিষয়ে ৫১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, উভয়পক্ষ মিলে আমরা এটার একটা ব্যবস্থা নেব বলে জানিয়েছেন তিনি।

এই বিষয়ে ৫১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শরিফুল রহমান বলেন, আপনাদের সহযোগিতায় আমরা এর আগে উচ্ছেদ চালিয়ে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আগামী ঈদের পর দখলমুক্ত জায়গায় বৃক্ষরোপণ করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close