নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ এপ্রিল, ২০১৯

সিআইপিআরবির তথ্য

দেশে প্রতিদিন পানিতে ডুবে ৩০ শিশুর মৃত্যু

নদীপ্রধান বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ হিসাবে প্রতি বছর পানিতে ডুবে মারা যায় ১২ হাজার শিশু। প্রতি বছর পানিতে ডুবে যারা মারা যায় তাদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের নিচে, যার মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিয়েই ঝুঁকিটা বেশি। নিউইয়র্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের অর্থায়নে ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট, সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ (সিআইপিআরবি) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিআরবি) যৌথ গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। তিনটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গত ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সাতটি উপজেলায় জরিপ শেষে যে তথ্য পেয়েছে, তা জানাতেই গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস।

২০১২ সাল থেকে শিশুমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে গবেষণা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০২০ সালের জুন অবধি চলবে এ গবেষণা। এই গবেষণা কাজে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পরামর্শক সিনার্গোস।

সংবাদ সম্মেলনে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের পরিচালক কেলি লারসন জানান, গত দুই বছরে সাতটি উপজেলার এক থেকে চার বছর বয়সি প্রায় ৭১ হাজার শিশুর ওপর জরিপ চালানো হয়। প্রতি বছর পানিতে ডুবে যে ১২ হাজার শিশু মারা যায়, তার মধ্যে এই বয়সি শিশুদের সংখ্যাই বেশি।

কেলি লারসন বলেন, এই শিশুদের ৭৫ শতাংশ বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। এর বড় কারণ হচ্ছে, পরিবারের অসচেতনতা। এ মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে। গ্রামীণ নারীরা এ সময় সাধারণত গৃহস্থালি নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। তাদের শিশুরা এ সময়ের মধ্যেই চলে যায় বাড়ির পাশে পুকুর বা ডোবার ধারে। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের নন-কমিউনিকেবল ডিজিসেস, ডিজঅ্যাবিলিটি, ভায়োলেন্স অ্যান্ড ইনজুরি প্রিভেশন বিভাগের কর্মকর্তা ডেভিড মেডিংস জানান, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩ লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, যার ৯০ শতাংশের বেশি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয়। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের তত্ত্বাবধানে পানিতে শিশু ডুবে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে ভিয়েতনামে কাজ করছে দেশটির শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চের (সিআইপিআরবি) পরিচালক আমিনুর রহমান জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আইসিডিডিআরবির যৌথ উদ্যোগে সাতটি উপজেলার পাশাপাশি বরিশালের তিনটি উপজেলায় তারা পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে কাজ করছেন। পরিবারকে সতর্ক করতে তারা সচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি সেখানে স্থাপন করেছেন ‘আঁচল ডে কেয়ার সেন্টার’। গ্রামের গৃহিণী বা কর্মজীবী মায়েরা তাদের শিশুদের এই ডে কেয়ার সেন্টারে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেখভালের জন্য রাখতে পারবেন। দশ উপজেলায় তাদের ডে কেয়ারের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। পাশাপাশি শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণের কর্মসূচিও চালু হয়েছে তাদের। আমিনুর রহমান জানান, ডে কেয়ার সেন্টারগুলোতে শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশের লক্ষ্যে নানা শিক্ষামূলক কর্মসূচিও রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close