আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ২৩ মার্চ, ২০১৯

আমতলীতে ঘুষ ছাড়া মেলে না মাতৃত্ব-ভাতা

বরগুনার আমতলীতে দরিদ্র প্রসূতি মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা তুলতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতাভোগীরা অভিযোগ করেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম অন্তভুক্ত ও ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের অফিস সহকারী সফিকুল ইসলামকে এক হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। আমতলী মহিলাবিষয়ক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১ হাজার ৩২৪ জন দরিদ্র প্রসূতি মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ইউনিয়নে ৯২৪ ও পৌরসভায় ৪০০ জন। প্রত্যেক প্রসূতি মা মাসে ৪০০ টাকা করে তিন বছরে ২৪ হাজার ৪০০ টাকা ভাতা পান। ছয় মাস পর পর এ ভাতা দেওয়া হয়।

ভাতাভোগীরা অভিযোগ করেন, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে, ব্যাংকের চেক ও টোকেন নিতে মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের অফিস সহকারী সফিকুল ইসলামকে এক হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। টাকা না দিলে ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত ব্যাংকের চেক ও টোকেন দেন না। যারা তার দাবি করা টাকা দিতে পারেন, তারা মাতৃত্বকালীন ভাতা পান। আমতলী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকজন মাতৃত্বকালীন ভাতাপ্রাপ্ত প্রসূতি আমতলী মহিলাবিষয়ক অধিদফতরে আসেন। তাদের কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন অফিস সহকারী সফিকুল ইসলাম। ওই টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাদের কাছ থেকে ব্যাংকের টোকেন কেড়ে নেন সফিকুল। নিরুপায় হয়ে সেলিনা, ফাহিমা ও সুখী আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের কাছে অভিযোগ দেন।

ভাতাভোগী সেলিনা, ফাহিমা ও সুখী বলেন, তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও অফিস সহকারী সফিকুল ইসলাম প্রত্যেকের কাছে এক হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই টাকা না দেওয়ায় তারা আমাদের ভাতা দিচ্ছেন না। এক বছর ধরে ঘুরিয়ে ব্যাংকের টোকেন কেড়ে নেন।

আমতলী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিএম মুছা বলেন, ভাতার তালিকায় সেলিনা, ফাহিমা ও সুখী নামের তিন প্রসূতির নাম দেওয়া হয়েছে এবং সেই মতে তাদের অগ্রণী ব্যাংকে হিসাবও খোলা হয়। কিন্তু মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের অফিস সহকারী সফিকুল ইসলাম ভাতা না দিয়ে ঘুরাচ্ছেন।

অভিযুক্ত আমতলী মহিলাবিষয়ক অধিদফতরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সফিকুল ইসলাম টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের নাম তালিকায় নেই। ব্যাংকে হিসাব যে কেউ খুলতে পারেন। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না থাকলে আমি কীভাবে টাকা দেব?

আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ভাতার টাকা না পেয়ে তিন প্রসূতি আমার কাছে এসেছিল। আমি সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। আমতলী মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানার মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি জানি না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে জেনে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close