নওগাঁ প্রতিনিধি

  ১২ মার্চ, ২০১৯

সাপাহারে পাতকুয়া খননে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর সাপাহারে ‘পাতকুয়া খননের মাধ্যমে বরেন্দ্র এলাকায় স্বল্প সেচে ফসল উৎপাদন’ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিনা খরচে পানি পাওয়ার অধিকার থাকলেও স্থানীয়দের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেওয়া হয়েছে কিন্তু পানি সরবরাহ করা হয়নি। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

জানা গেছে, নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকা সাপাহার-পোরশা-পতœীতলায় পানির অভাবে বছরের অধিকাংশ সময় ধরে প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকে। এসব পতিত জমিতে স্বল্প সেচে ফসল উৎপাদনের জন্যে দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী পাতকুয়া খননের সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ‘পাতকুয়া খননের মাধ্যমে বরেন্দ্র এলাকায় স্বল্প সেচে ফসল উৎপাদন’ প্রকল্প হাতে নেন। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাতকুয়া খনন শুরু করা হয়। প্রতিটি পাতকুয়া খনন, সোলার স্থাপন ও পানি সরবরাহের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আরো জানা গেছে, সাপাহারে ১১০টি পাতকুয়ার খনন কাজ শুরু হয়। উপজেলার বাহারপুর গ্রামে একটি পাতকুয়া খনন করে গত এক বছর আগে স্থানীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হলেও সেখানে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়নি। ফলে স্থানীয়রা নিজস্ব টাকায় সেচ পাম্প স্থাপন করে রবি শস্য চাষাবাদ করছেন। তাদের বিনা খরচে পানি পাওয়ার কথা ছিল।

উপজেলার বাহারপুর গ্রামের রমজান আলী ও মেহেদি হোসেন বলেন, পাতকুয়া স্থাপনের জন্য আমরা জমি দেই। তারা শুধু কুয়া খনন করে দিয়ে চলে যায়, কোনো সোলার প্যানেল স্থাপন করেনি। সোলার প্যানেলের বিদ্যুৎ পেলে সেচের জন্য আরো কম খরচ হতো।

উপজেলার বিদ্যানন্দী গ্রামের পলাশ আলী বলেন, এখানকার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ৬ বছর আগে একটি পাতকুয়া খনন করে গ্রামবাসী। ওই পাতকুয়াতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে শুধুমাত্র সোলার প্যালেন ও সেচ পাম্প স্থাপন করেন। সেখানে কম গভীরতায় সেচ পাম্প স্থাপন করায় আমরা সেচ কাজে পানি পাই না এমনকি খাবার পানিও পাই না।

বিদ্যানন্দী মাদ্রাসা পাড়ার রোকেয়া বেগম বলেন, খরা মৌসুমে এখানে পানি থাকে না। পাতকুয়া খননের সময় ঠিকাদাররা পানি সাপ্লাই দেওয়ার নামে প্রত্যেক বাড়ি থেকে ৫০০-২০০০ টাকা করে নিয়েছে। অথচ আমরা এখনো পানি পাচ্ছি না।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাপাহার উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বরত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী ইন্তেখাফ আলম বলেন, সাপাহারে ১১০টি পাতকুয়ার মধ্যে ১০১টি পাতকুয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৯টি পাতকুয়ায় সোলার প্যানেল নির্মাণে দেরি হওয়ায় অন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অচিরেই বিদ্যানন্দীর পাতকুয়াতে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। কাজে দেরি করায় আগের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী সিব্বির আহম্মেদ জানান, সাপাহার এবং পতœীতলা উপজেলায় কাজ চলমান রয়েছে। কাজের মান দেখে কাজের বিল দেওয়া হয়, এখনো প্রথম পর্যায়ের কাজ চলছে। যে পাতকুয়াগুলো অসম্পূর্ণ আছে অচিরেই সেগুলো সম্পূর্ণ করা হবে। সাপাহারে ১১০টি পাতকুয়া খনন, সোলার প্যানেল নির্মাণ ও পানি সরবরাহে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close