নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে ৩ নারীকে নির্যাতন

মূলহোতা ইউসুফ মেম্বার ২ দিনের রিমান্ডে

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে মিথ্যা যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে তিন নারীকে নির্যাতন করার ঘটনার মূলহোতা ইউসুফ মেম্বারকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের পুলিশি রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

এদিন আদালতে ইফসুফ মেম্বারের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। এমনকি আদালতে তার নিজের পরিবারের কোনো সদস্য কিংবা আত্মীয়-স্বজনও উপস্থিত ছিলেন না। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতায় নির্যাতিতদের একজন ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে গত সোমবার বিকেলে মামলা করার পরপরই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে মূলহোতা ইফসুফ মেম্বারকে গ্রেফতার করে বন্দর থানা পুলিশ।

বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু। এছাড়া অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়ালিউল্লাহ, অ্যাডভোকেট ইমতিয়াজ হোসেন রাকিব, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, বর্তমান যুগে আসামির নেতৃত্বে কীভাবে তিন নারীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে আমরা আদালতে তা উপস্থাপন করেছি। পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঘটনার সঙ্গে অন্যান্য জড়িতদের সম্পর্কে জানতেই আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

প্রসঙ্গত, ১৬ ফেব্রুয়ারি ধারের টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে বন্দরের দক্ষিণ কলাবাগান এলাকার খালপাড়ের মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ (৫০), তার দুঃসম্পর্কের খালাত বোন আসমা বেগম (৩৫) এবং বুরুন্দি এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগমকে (৩০) মিথ্যা যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়। ওই তিন নারীকে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে ইউসুফ মেম্বারের নেতৃত্বে এলাকার কথিত বিচারকরা।

কেবল মারধরই নয় জোর করে ওই নারীদের মাথার চুলও কেটে দেওয়া হয়। এরপর ওই অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয় তাদের। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলেও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার কমিশনের মধ্যস্থতায় সন্ধ্যায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা করেন নির্যাতনের শিকার ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close