প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ফুল বাণিজ্যের মাস

পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ফেব্রুয়ারির এই তিন দিবসকে ঘিরে শুরু হয় ফুল বেচাকেনার মৌসুম। দেশের বিভিন্ন ফুলচাষিদের মতো যশোরের ঝিকরগাছা ও কক্সবাজারের চকরিয়ার চাষিরা ফুলের চাহিদা যোগান দিতে পর্যাপ্ত ফুল উৎপাদনে দিন-রাত কাজ করে চলেছেন। ইতোমধ্যেই ঝিকরগাছায় ৪০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ২৫ কোটি টাকার ফুল হয়েছে। চকরিয়ায় বিক্রি হচ্ছে কোটি কোটি টাকার ফুল। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট :

যশোর : সারা দেশে যে ফুল বেচাকেনা হয় তার অন্তত ৭০ ভাগই যশোরের গদখালি-পানিসারা থেকে। এবার ফুলের উৎপাদন ও চাহিদা অন্যান্য যেকোনো বারের তুলনায় বেশি। পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি হারুণ-অর-রশিদ জানান, চোরাপথে ফুল আমদানি হওয়ায় ফুলের বিক্রিমূল্য কম হচ্ছে। গদখালির পটুয়াপাড়া গ্রামের আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, ইজারাদারের বিভিন্ন সিন্ডিকেটের কারণে কখনো কখনো ফুলের বাজার অস্থিতিশীল হয়। তিনি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সৈয়েদপাড়া গ্রামের রমজান আলী জানান, শ্রমিক খরচ, চারার দ্বিগুণ মূল্য, সার-কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ফুলের দাম একটু বেশি। দেশের ছোট-বড় এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে আসেন। কিন্তু এ হাটসংলগ্ন এলাকায় কোনো আবাসিক হোটেল না থাকায় ক্রেতারা অসুবিধা ভোগ করেন।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম জানান, কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ফুলচাষিরা কোরিয়া, থাইল্যান্ড, আমেরিকা সফর করেছেন। গদখালিতে ফুল সংরক্ষণের জন্য হিমাগার দরকার। সরকার সেটির কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাজা ফুলের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ফুল ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্লাস্টিকের ফুল স্বাস্থ্যের জন্য এবং পরিবেশের জন্যও হুমকিস্বরূপ। ঝিকরগাছা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দীপঙ্কর দাস জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আরো ১০-১৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।

চকরিয়া (কক্সবাজার) : কক্সবাজারের চকরিয়ায় লক্ষ্যারচর, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের চাষিরা ফুল বিক্রি নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে প্রায় কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন চকরিয়ার ফুলচাষিরা। এরই মধ্যে ‘গোলাপনগর’ হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়ন।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে ফুল বিক্রি করেন লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ হাজার পিস ফুল কেনা হয় চকরিয়ার বরইতলী থেকে। আর বিশেষ দিবসে তা কয়েকগুণ বিক্রি বেড়ে যায়। এবারের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

উপলক্ষে আগাম অর্ডার দেওয়া হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার গোলাপ ও গাডিওলাস ফুলের।’

হারবাংয়ের ফুলচাষি আসাদ বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে উৎপাদন মাত্রা আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেত। এবারের ভালোবাসা দিবসে কম করে হলেও তিন লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে।

স্থানীয় চাষিরা জানান, প্রতিটি গোলাপের দাম মানভেদে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে পাঁচ-সাত টাকায়। আর বিভিন্ন রঙের গাডিওলাস ফুল বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে শতাধিক ফুলের বাগান রয়েছে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আতিক উল্লাহ দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রায় ২০০ একর জায়গাতে ফুলের চাষ হচ্ছে।

চকরিয়া ফুল ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ মো. নুরুল ইসলাম দাবি করেছেন, উৎপাদিত ফুল সংরক্ষণের মাধ্যমে তাজা বাজারজাতকরণের কোনো ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close